ময়মনসিংহের ফুলপুরে হরেক রকমের কৃষিজ পণ্যের চাষ হলেও তরমুজের চাষটা সেভাবে হয় না। এর প্রতি রয়েছে কৃষকের অনাগ্রহ। উপজেলার মোট ফসলি জমি ৬৩,১৪৮ হেক্টর হলেও মাত্র ১/২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়। ফলে অন্য জেলা উপজেলা থেকে আমদানি করে তরমুজের চাহিদা পূরণ করতে হয় স্থানীয়দের। এখন তরমুজের ভরা মৌসূম থাকলেও পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট উপজেলা থেকে আসা কিছু তরমুজ ব্যতিত ফুলপুরের স্থানীয় কৃষকদের চাষ করা কোন তরমুজ বাজারে দেখা যাচ্ছে না।
ফুলপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কয়েকটি তরমুজের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বরিশাল থেকে তারা এসব তরমুজ আমদানি করেছেন। ঢাকা-হালুয়াঘাট মহাসড়ক ঘেঁষে ফুলপুর বাসস্ট্যান্ডে মেলে বসেছে তরমুজের বড় বড় দোকান।
তরমুজ ব্যবসায়ী রতন জানান, বরিশাল থেকে বেশি দরে কেনা এসব তরমুজ। ভাড়াও পড়েছে বেশি। বিধায় দামও একটু বেশিই। তিনি প্রতি তরমুজ দেড়শ থেকে দুইশ টাকা দাম হাঁকছেন। মুক্তার উদ্দিন প্রতি তরমুজের দাম হাঁকছেন তিন থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। তার তরমুজগুলো তুলনামূলক একটু বড় বটে।
কথা হয় তরমুজ ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আমরা বরিশাল থেকে এই তরমুজগুলো আনছি। ধারে কাছে এখনও তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে আমরা কম রাখতে পারছি না। তিনি ছোট আকৃতির প্রতিটি তরমুজ ৫০ থেকে ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন বলে জানান। আর মাঝারি তরমুজের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এর চেয়ে কমে বিক্রি করলে পোষায় না বলে জানান তারা। সফির উদ্দিনও বরিশাল ভোলা থেকে তরমুজ এনেছেন। তার নিকট ১০০ টাকার নিচে কোন তরমুজ নেই। গত দু’দিন যাবৎ থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছে বলে দরটা একটু থেমে আছে। তা নাহলে আরও বাড়তো বলে জানান তিনি।
তরমুজ কিনতে আসা সঞ্চুরের জালাল উদ্দিন বলেন, ফুলপুরে তরমুজের চাষ হলে আমরা আরও কম দামে কিনতে পারতাম। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হাম্মিম জাহানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফুলপুরে তরমুজ চাষি কম। সাহাপুর, রামভদ্রপুর ও ভাইটকান্দি এলাকায় কিছু চাষি তরমুজ চাষ করে থাকেন। আমাদের পক্ষ থেকে উদ্বুদ্ধকরণের কোন কমতি নেই।
তরমুজ চাষ কমের কারণ জানতে চাইলে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মমতাজ উদ্দিন জানান, এখানের কৃষকরা শাক-সবজিতেই আগ্রহী বেশি। কারণ, সময়মত তরমুজের বীজ পাওয়া যায় না। পেলেও বীজের দাম অনেক বেশি। তাছাড়া ভরা মৌসূমে অনেক সময় ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টিতে এর ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে তরমুজ চাষে কৃষকরা আগ্রহী হয় না।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার