চান্দিনায় উপজেলার দোল্লাই নোয়াবপুর দক্ষিণ বাজারে ‘নবাবপুর মেডিকেল সেন্টার’ নামে গড়ে ওঠে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র। সেখানেই বসতেন ভুয়া গাইনি ডাক্তার কামরুন্নাহার। কামরুন্নাহার নিজের নামে চিকিৎসাপত্রে ‘নাহার কনসালটেশন সেন্টার’ এবং নিজের নাম ‘ডা. আর.এ.কামরুন্নাহার’ লিখে চিকিৎসাপত্র ছাপান। ওই চিকিৎসা পত্রে কামরুন্নাহার নিজের নামের পাশে ‘সনোলজিষ্ট, মেডিসিন, মা ও শিশু, গাইনি, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করেন। প্রকৃতপক্ষে সব ডিগ্রি-ই মিথ্যা। এমনকি তার প্রেসকিপশনে বিএমডিসি’র কোন রেজিস্ট্রেশন নম্বরও উল্লেখ নেই।
সরেজমিনে এলাকাঘুরে জানা যায়, ভুয়া এই ডাক্তারের প্রকৃত নাম রাশেদা আক্তার (৩৩)। সে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেম মাস্টারের মেয়ে। ১৯৯৯ সালে চৌদ্দগ্রামের কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। পরে দেবিদ্বার মহিলা কলেজে দুইবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ২০০২ সালে কুমিল্লার ঠাকুরপাড়াস্থ মেডিকেল ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়ে ২০০৫ সালে ডিপ্লোমা মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে উত্তীর্ণ হন। একই বছর তিনি উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের কৈলাইন গ্রামের ডিপ্লোমা চিকিৎসক খলিলুর রহমান পলাশের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
নবাবপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে খলিলুর রহমান পলাশ নবাবপুর বাজারের একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ফার্মেসি চালু করেন। সেখানে তার স্ত্রীকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। রাশেদা আক্তার ওরফে কামরুন্নাহার। গাইনি ডাক্তার হিসেবে সকলের কাছে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ইলিয়টগঞ্জের সেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাশেদা আক্তার ওরফে কামরুন্নাহারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। এতকিছুর পরও ফার্নিচার দোকানের পাশে ‘নাহার কনসালটেশন সেন্টার’ নাম দিয়ে ক্লিনিকের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওই কথিত ডাক্তার।
এব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুজিকুর রহমান জানান, ওই ডাক্তার সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। নবাবপুরে কয়েকটি অনুমোদনবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে। ভুয়া ডাক্তার ও অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন