রাঙামাটি জেলায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। সরকারি হিসাবে, গত জুন মাসে ৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মে মাসে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৫ জন। এরপর জুন থেকে জুলাই মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫জনে। এরমধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এ ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের মানুষের মধ্যে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়। একটা ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার। অন্যটা হেমোরেজিক ফিভার। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশেষ করে গরম এবং বর্ষার সময়ে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। বিশেষ করে বর্ষার শুরুতে সেগুলো থেকে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত মশা বিস্তার লাভ করে। ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের হয়। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চারবার হতে পারে। তবে যারা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে রোগটি হলে সেটি মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার জানান, ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যাওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি বিশেষজ্ঞ টিম রাঙামাটি এসে বিভিন্ন এলাকা থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে রির্পোট দিয়েছে। সেই হিসেবে পৌর এলাকায় চিকনগুনিয়া এবং ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ পাওয়া যায়। ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাচতে হলে এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেতে কামড়াতে না পারে তার ব্যবস্থা করা। মশা নিধনের স্প্রে, কয়েল, ম্যাট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
রাঙামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আকরাম হোসেন ও চন্দ্র শেখর চাকমা জানান, কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত থাকার পর হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে রক্ত পরীক্ষা করে জানা যায় ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। কী অবস্থায় আছি সেটা ডাক্তার আসলে বোঝা যাবে।
অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি রাঙামাটিতে বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন মশার উপদ্রব আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এছাড় দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধন স্প্রে ব্যবহার বন্ধ, ময়লা আবর্জনা অপরিষ্কার, ডাস্টবিন ও ড্রেন সময়মত পরিষ্কার না করার কারণে একদিকে যেমন পৌর এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী জানান, ‘গত কয়েক মাস ধরে পৌর এলাকায় সিভিল সার্জনসহ আমরা ডেঙ্গু মশা নিধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হয়েছে। বাকি এলাকাগুলোতেও মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হবে। পাশাপাশি পৌর এলাকার বাসিন্দাদের তাদের নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য মাইকিংসহ দ্রুত প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান