প্রতারণার শিকার হয়ে মুম্বাইয়ে পাচারকালে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি কিশোরী দেশে ফিরতে চায়। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের চাইল্ড লাইনের হেফাজতে থাকা সুনামগঞ্জের কিশোরী পরশমনি আক্তার আলপনা (১৫) কান্নাজিড়ত কণ্ঠে এ আকুতি জানিয়েছেন। তাকে পাচার করে ভারতের মুম্বাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
পরশমনি গত শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর দিনাজপুর জেলার চন্দাগড় এলাকার সাদিকুলের পুত্র দেলোয়ার হোসেন তাকে বিয়ে করে। এরপর তারা ২ দিন দিনাজপুরে থাকেন। পরে দু'জনেই মুম্বাই চাকরি করবে স্বামী এমন আশ্বাস দেয়। পরে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার লালপুরে ধরণি দাস ওরফে ধরোর বাড়িতে নিয়ে যায় স্বামী দেলোয়ার।
সেখানে ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাকে রেখে খাবার আনতে যাবার কথা বলে বেড়িয়ে যায় দেলোয়ার। এরপর আর তার হদিস মেলেনি। এদিকে স্বামীর চিন্তায় মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করে। এর মধ্যেই মেয়েটির কাছ থেকে একটি দামি মোবাইল এবং ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে নেয় ভারতীয দালাল ধরো। বিষয়টি প্রতিবেশিরা জানতে পেরে ভারতের হিলি থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়সের হওয়ায় পুলিশ চাইল্ড লাইন নামের একটি সংস্থার হেফাজতে দেয় পরশমনিকে। ইতোমধ্যে ভারতের ওই দালালকে পুলিশ গ্রেফতার করে ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। কিন্তু কথিত স্বামীর কোন খোঁজ মিলেনি।
চাইল্ড লাইনের কোঅর্ডিনেটর সুরজ দাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এই মেয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মেয়েটি তার বাড়ির ঠিকানা সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানার পাইকরহাট ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে বলে জানিয়েছে। তার বাবার নাম আব্দুল হান্নান মিয়া এবং মায়ের নাম আলেয়া খাতুন। আর কথিত স্বামী দেলোয়ার হোসেনে বাড়ি দিনাজপুরের চন্দাগরে এবং মেয়েটির শ্বশুরের নাম সাদিকুল এবং শাশুড়ি আনোয়ারা বলে তিনি জানিয়েছেন।
মেয়েটিকে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সুরজ দাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মেয়েটির পরিবার যোগাযোগ করলে সব নিয়ম মেনে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
বিডি প্রতিদিনি/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হিমেল