বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস চলাকালীন সময়ে ২শ’ টাকা করে ফি (ভিজিট) নিয়ে রোগী দেখার অভিযোগ উঠেছে মেডিকেল অফিসার ডা. এটিএম জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে। সরকারি কার্যদিবসে প্রতিদিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সহজ-সরল রোগীদের জিম্মি করে ডা. জিয়া মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যারা ২শ’ টাকা করে ফি না দিয়ে ৩ টাকার সরকারি টিকেট নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যান তাদেরকে ওই চিকিৎসক কক্ষ থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আজ রবিবার সকাল ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. জিয়া রোগীদের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে নেওয়ার দৃশ্য একটি মুঠোফোনে ক্যামেরাবন্দি করেন একজন রোগী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেহেন্দিগঞ্জের চাঁদপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকার রোকসানা বেগম মাথা ও পেটে ব্যাথা এবং জ্বর নিয়ে আজ সকাল ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ৩ টাকার সরকারি টিকেট কেটে মেডিকেল অফিসার ডা. এটিএম জিয়াউদ্দিনের কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় ডা. জিয়া তার সাথে অশোভন আচরন করেন।
অভিযুক্ত মেডিকেল অফিসার ডা. এটিএম জিয়াউদ্দিন মুঠোফোনে প্রথমে সরকারি অফিসে টাকা নিয়ে প্রাইভেট রোগী দেখার কথা অস্বীকার করেন। আজ সকাল ১১টার দিকে সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসে টাকা নিয়ে প্রাইভেট ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার একটি স্থির চিত্র এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে জানানোর পর তার মন্তব্য জানতে চাইলে ডা. এটিএম জিয়াউদ্দিন বলেন, সরি, ভুল হয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল আহসান বলেন, সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টাকার বিনিময়ে রোগী দেখার কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ কেন করতে হবে, সরকারী চিকিৎসা ব্যবস্থা জনগণ ঠিকমতো পাচ্ছে কিনা তা স্ব-প্রনোদিত হয়ে কেন তদারকি করেন না জানতে ডা. নাজমুল আহসান বলেন, প্রশাসনিক কাজসহ বিভিন্ন মিটিং-সেমিনার নিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকেন। তাই সব সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থার তদারকি করতে পারেন না।
এর আগে গত বছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস চলাকালীন সময়ে ২শ’ টাকা করে ফি নিয়ে ডা. জিয়ার রোগী দেখার সচিত্র একটি সংবাদ প্রচারিত হয়েছিলো একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে। ওই সংবাদ প্রকাশের পর সিভিল সার্জন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও অভিযুক্ত ডা. জিয়ার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জের সাংবাদিক সঞ্জয় বলেন, গত বছর একটি টিভি চ্যানেলে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টাকার বিনিময়ে ডা. জিয়ার চিকিৎসা দেওয়ার সংবাদ প্রকাশের পর সিভিল সার্জন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু সিভিল সার্জন টাকা খেয়ে তদন্ত ধামা চাপা দেওয়ায় পরবর্তীতে ডা. জিয়া আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ করেন সঞ্জয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে ৩ বার রিং দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার