রাজবাড়ীর পথশিশু মনিরকে চিকিৎসা দিয়ে নতুন জীবন দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আশা জাগানিয়া এমন ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে।
পিতামাতাহীন মনির বড় হয়েছে রাজবাড়ীর রেলওয়ে বস্তিতে। খুব ছোট বয়সে সে তার বাবাকে হারায়। পরে মা অন্যত্র বিয়ে করে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাস্তার পাশ দিয়ে চলার সময় বেপরোয়া একটি বাস তাকে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করে। এই ঘটনায় আহত হয় আরও তিনজন। কিন্তু অন্যদের আত্মীয়-স্বজন থাকায় তারা সেবা নিয়ে ঘরে ফিরেছে। কিন্তু মনির হাসপাতালেই পড়েছিল। ইতোমধ্যে তার পায়ে ইনফেকশন ধরা পড়ে। ডাক্টার জানায়, পায়ে অপারেশন না করলে সে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। তবে হাজার অনুরোধেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরবর্তিতে একটি নিউজ পোর্টাল সংবাদের মাধ্যমে মনিরের জন্য সাহায্যের আবেদন জানায়। বিষয়টি নজরে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি শেখ স্বাধীন মো. শাহেদের। যিনি ইতোমধ্যে ফরিদপুরে প্রতিষ্ঠিত জয় বাংলা মন্দির নিয়ে সর্বমহলে প্রশংসা অর্জন করেন। তিনি তাৎক্ষণিক সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মনিরের চিকিৎসার বিষয়ে নিশ্চয়তা দেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য মনিরকে তিনি রাজবাড়ি থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করার পরামর্শ এবং সহযোগিতা প্রদান করেন। পরে শাহেদ শুক্রবার ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুমিতক্রমে মনিরের অপারেশন থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচের ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বহন করবে বলে ডাক্তারদের যত দ্রত সম্ভব অপারেশনের অনুরোধ জানান তিনি। তার এই কাজে সহযোগিতা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য নাইম হোসেন মেরিন এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
যোগাযোগ করা হলে পথশিশু মনির জানায়, তার পায়ে খুব ব্যথা। পায়ে গত পরশু থেকে জালাপোড়া (ইনফেকশন) শুরু হয়েছে। শুক্রবার ছাত্র ভাইয়েরা ডাক্তারকে ডেকে এনে অপারেশন করতে বলছে। ডাক্তার বলছে কাল পরশুর মধ্যেই অপারেশন করবে। তারা আমারে স্কুলেও ভর্তি করবে বলছে।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের (ফমেক) অধ্যক্ষ খবিরুল ইসলাম খবির বলেন, ছাত্রলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ফমেক ছাত্রলীগের ছেলেদের সাথে আমার কথা হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে ছাত্রলীগ একটা ভাল উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি তারা পথশিশিশুটাকে স্কুলে ভর্তি করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটার জন্য প্রয়োজনে আমিও সহযোগিতা করব।
ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, যেখানেই মানবতা ভূলুণ্ঠিত হবে আমরা ছাত্রলীগ সেখানেই আলোর মশাল হাতে নিয়ে থাকবো। ছাত্রলীগ হবে যেকোনো ভাল কাজের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডার। তাই আমরা প্রটোকল চাই না। আমরা চাই একটা ভাল কাজ যার মাধ্যমে একটা ভোট বাড়বে নৌকার।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম