দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার শাকুয়াই ইউনিয়নের সরকারি খাদ্য গুদামটি অচলাবস্থায় পড়ে আছে। বর্তমানে খাদ্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত এ ভবন এলাকার জনগণের কোনো কাজেই আসছে না। অব্যবস্থাপনার ফলে এ গুদামের আশপাশ জুড়ে পরিণত হয়েছে নোংরা পরিবেশ আর মাদকসেবীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গুদামে অবস্থিত স্টাফ কোয়ার্টার ও নিয়ন্ত্রক কার্যালয়টি বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি না থাকায় নষ্ট হচ্ছে সরকারি গুদামের ভেতর-বাহিরের মূল্যবান সামগ্রী।
জানা যায়, ৫০০ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গুদামটি ১৯৮১ সালে উদ্বোধন করেন তৎকালীন খাদ্য মন্ত্রী আব্দুল মোমেন খান। ওই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া কৃষকদের সহজতর করার লক্ষ্যে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় এই খাদ্য গুদাম।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গুদামের স্বাভাবিক গতিশীলতায় এলাকার পার্শ্ববতী ইউনিয়নসহ প্রান্তিক কৃষকরা উৎপাদিত ধান গম বিক্রয়ের সুবিধা ভোগ করত। বেশ কয়েক বছর এর কার্যক্রম চালু থাকলেও প্রায় ২০ বছর ধরে কোন কার্যক্রম না থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছে খাদ্য শস্য বিক্রয় ব্যবস্থা। বর্তমানে গুদামটি বন্ধ থাকায় উচ্চমূল্যে পরিবহন ব্যবস্থায় খাদ্য শস্য বিক্রয় করতে হচ্ছে। বর্তমানে গুদামটি হিমাগারে রূপান্তর করতে পারলে এলাকার সুবিধাবঞ্চিত কৃষকরা লাভবান হবেন। অন্যদিকে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে বলে ধারণা স্থানীয় কৃষকদের।
জৈনাটি গ্রামের কৃষক মো. খায়রুল ইসলাম জানান, গুদামটি চালু থাকা অবস্থায় উৎপাদিত ফসলাদি নায্য মূল্যে বিক্রয় করতাম। হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের মত সাধারণ কৃষক সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্জ নাজিম উদ্দিন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে গুদামটি অচলাবস্থায় পড়ে আছে। কোনো লোকবল না থাকায় অন্তত দুটি ইউনিয়নের মানুষ প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিজ উদ্যোগে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টা করেছি।
উপ-খাদ্য পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) মোফাজ্জল হোসেন মনির বলেন, আমি অন্য একটি খাদ্য গুদামের দায়িত্বে থাকায় বাড়তি সময়ের অভাবে দেখাশুনা করতে পারছিনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে গুদামটি পরিদর্শন করে সংস্কারের আবেদন জানানো হবে।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা এস.এম সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ময়মনসিংহের ২টি উপজেলাতে সরকারি খাদ্য গুদাম সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। এই খাদ্য গুদাম দুটি অতি শিগগিরই সংস্কারপূর্বক ব্যবহার উপযোগী করে তোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন পক্ষকে অবহিত করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/১৩ অক্টোবর ২০১৮/হিমেল