বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। গত তিনদিন ধরে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া শরনার্থীরা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পেগুলোতে অনেকেই পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে টেকনাফের শালবনের রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পের ভেতরের রাস্তাগুলো কাঁদা ও পানিতে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে। আবার কোথাও কোথাও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে পাহাড় ধসের আতঙ্ক লক্ষ্য করা গেছে।
লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সেনোয়ারা বলেন, আমাদের পরিবারে চারজন সদস্য রয়েছে। আমার স্বামী হারিয়ে দুঃখ কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। বৃষ্টি হলে কষ্ট বাড়ে, সঙ্গে পাহাড় ধসের শঙ্কায় থাকি। ঘরটি পলিথিনের, তাই একটু বাতাস ও বৃষ্টি হলে চিন্তায় থাকি। এভাবে এক বছর পাড় করেছি, জানি না আর কতদিন এভাবে থাকতে হবে। টানা বৃষ্টি হলে পানি ঘরে ঢুকে মেঝে ভিজে গেলে রাতের বেলায় না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়।
ডি ব্লকের ময়ুরা খাতুন (৩৫) বলেন, পানির অভাবে রান্নাবান্না, কাপড় ধোঁয়া-মোছার কাজ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তবে বৃষ্টি হলে ঘরের চালা থেকে গরিয়ে পড়া পানি জমা রেখে খাওয়া হয়। নতুবা খাবার পানি আনতে হচ্ছে প্রতিদিন এক-দেড় কিলোমিটার দূর থেকে।
শালবন ডি ব্লকের মাঝি ছৈয়দুর আমিন বলেন, বৃষ্টিতে ঢলের পানির সঙ্গে ময়লা কাঁদা-মাটি ও আবর্জনা মিশ্রিত পানি দ্রুত গতিতে নিচে নেমে আসে। পাহাড়ি ঢলের পানি, কাঁদামাটি ও টয়লেটের ময়লা একসঙ্গে মিশে ঢালু স্থান বেয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসার কারণে নিচে থাকা রোহিঙ্গাদের দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এতে করে পানিবাহিত রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, টানা বৃষ্টি হলে রোহিঙ্গাদের ভোগান্তি বাড়ে। তবে ক্যাম্পগুলোতে কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১৩ অক্টোবর ২০১৮/হিমেল