নোয়খালী সদরের পূর্ব শুল্লকিয়া গ্রামে পারভীন আক্তার ফাহিমা (১৭) নামে পোশাক শ্রমিককে হত্যা মামলায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর সেলিম অপরাধ স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত মো: শেখ সেলিম (৩০) নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ডিগ্রির চর গ্রামের শুক্কুর আলী শেখের ছেলে।
শুক্রবার রাত একটার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর একটি দল চট্টগ্রামের চাটগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। শনিবার দুপুরে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেসবিফিংয়ে পিবিআই চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার মো: ইকবাল জানান, নিহত পারভীন আক্তার ফাহিমা ও শেখ সেলিম চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। গত রমজানের তিনদিন আগে তারা বিয়ে করে এবং এরপর দুই মাস ঢাকায় থাকে। সেলিম এর আগেও আরো এক বিয়ে করেন এবং তার একটি সন্তান রয়েছে জানান পর ফাহিমা তাকে ছেড়ে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে তাদের দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হতো।
বাড়িতে আসার পর ফাহিমা পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েছে বলে তথ্য পায় সেলিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার সেলিম নোয়াখালী আসে। জেলা সদরের সোনাপুর থেকে দুইশ টাকায় একটি ধারালো চুরি কিনে নেয় সে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মুঠোফোনে বাড়ির পাশে ঝোঁপের মধ্যে ফাহিমাকে ডেকে নেয় সে। এরপর কথা কাটকাটির এক পর্যায়ে পেছন দিক থেকে ফাহিমাকে ধারালো চুরি দিয়ে গলাকেটে তাকে হত্যা করে সে। হত্যার পর তার হাত পায়ের রগসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ক্ষতবিক্ষত করে আবার চট্টগ্রাম ফিরে যায় সে। যাওয়ার সময় ফাহিমার ব্যবহৃত মুঠোফোন সাথে করে নিয়ে যায় এবং সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করে। পরে তার বিবস্ত্র ও ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার পেটে বিদ্ধ অবস্থায় একটি চুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর মোবাইল ফোন ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে সেলিমের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত চট্টগ্রামের চাটগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকায় একটি টিনসেড ঘর থেকে পিবিআই তাকে আটক করে। সেখানে সে রাজমেস্ত্রীর কাজ করতো।
এ ব্যপারে নিহতের বাবার জহিরুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় সেলিমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হারিজ করা হবে বলে প্রেসব্রিফিংয়ে জানানো হয়। এ দিকে স্থানীয়দের ধারনা এ ঘটনার সাথে একাধিক ব্যাক্তি জড়িত থাকতে পারে। এলাকা বাসী গভীরভাবে তদন্তের দাবি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর