নাটোরের বাগাতিপাড়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার তমালতলা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়। তবে পুলিশ ভাঙচুরের সত্যতা স্বীকার করলেও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছে।
দলীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই সভা বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে শুরু হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার রহমান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের ছোট ভাই ওহিদুল ইসলাম গকুলসহ ৬ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে সভার শুরুতেই আবুল হোসেন সমর্থকদের সাথে গকুল সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দলীয় নেতা-কর্মীদের গোপন ভোটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পর সেকেন্দার রহমান প্রথম, আবুল হোসেন দ্বিতীয় ও এমপি বকুলের সহোদর ওহিদুল ইসলাম গকুল তৃতীয় হন।
এই ফলাফল ঘোষণার পর পরই গকুল সমর্থকরা আবুল সমর্থকদের ওপর চড়াও হয় এবং অনুষ্ঠানস্থলের আসবাব পত্র ভাঙচুর করে। এসময় আবুল সমর্থক ফরিদুজ্জামান শ্রাবণ ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তমালতলা মহিলা কলেজ মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। এসময় সেখানেই মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পরে গকুল সমর্থকরা আবুল সমর্থক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিপনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ আবুল সমর্থক তমালতলা চকহরিপুর গ্রামের তুহিন, মেহেদি হাসান, শ্রাবন ও শিপন নামে চারজনকে আটক করে।
এদিকে এ ঘটনায় বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুকুমার মুখার্জী তিনকড়ি ঠাকুর বলেন, ভোটাভুটি শেষে আগে-পরে বসা নিয়ে একটু উত্তেজনা হয়। তবে জেলা নেতারা বিষয়টি সমাধান করেছেন। ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগ হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তোজা আলী বাবলু বলেন, সোমবার বিকেলে অনেক উৎসুক মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিল। কিন্তু হামলা বা ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেনি।
জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ভোটাভুটি পরিচালনা করেন এবং ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। এসময় কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে তারা ফিরে আসার পর আগে ভোট দেয়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়েছে বলে শুনেছেন, ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ নয়।
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ চারজন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভোটাভুটি নিয়ে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে সত্যি কিন্তু কোন ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন