দিনাজপুরে চিড়িয়াখানার মত খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে এক কন্যা শিশুকে। অন্য কেউ নয় গর্ভধারিণী মা নিজেই এ কাজটি করছেন। একটি বিশেষ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি খাঁচায় বন্দি করে রেখেছেন শিশুটিকে।
জানা গেছে, পরিবারটি হত দরিদ্র হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর চিকিৎসকরা বলছেন, দ্রুত ভালো চিকিৎসা পেলে শিশুটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
এই বয়সে হেসে খেলে বেড়ানোর কথা থাকলেও শিশুটি আজ খাঁচায় বন্দি। স্কুল তো দূরের কথা গ্রামের বাচ্চারাও খেলতে চায় না ৬ বছর বয়সী এই নূরে জান্নাতের সাথে। এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ে দিনাজপুর সদরের কমলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়দেবপুর গ্রামে।
শারীরিকভাবে অন্য দশজন স্বাভাবিক শিশুর মত নূরে জান্নাত। কিন্তু বিশেষ এক রোগের (সেরিব্রাল পলসি) কারণে কিছুক্ষণ পরপর বিচলিত হয়ে নিজের শরীরে নিজে আঘাত করতে থাকে সে। ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে ক্ষত। সবচেয়ে বেশি আঘাত করে নিজের মুখমণ্ডলে। ফলে সবসময় রক্তাক্ত অবস্থায় থাকে তার মুখ।
বাবা কৃষি শ্রমিক, তাই স্বল্প আয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অপরদিকে মা বাধ্য হয়েই কোমড়ে দড়ি বেঁধে তাকে খাঁচায় বন্দি করে রাখেন।
নূরে জান্নাতের বাবা সিদ্দিক আলী ও মা ফেন্সি আরা সন্তানের জন্মের পর থেকেই চিকিৎসার জন্য শেষ করেছেন নিজেদের সর্বস্ব। একমাত্র কন্যা শিশুকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে এই পরিবারটি। এমন শিশুদের সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত তারা কোন সরকারি সহযোগিতা পায়নি।
এ বিষয়ে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শুভ মুখার্জি জানান, এ ধরনের শিশুদের অবহেলা না করে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অন্যান্য বাচ্চাদের মত স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
নূরে জান্নাত অন্য শিশুদের মত সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে-এমনটাই প্রত্যাশা তার বাবা-মায়ের।
বিডি প্রতিদিন/কালাম