তিনজন ডাক্তার দিয়ে চলছে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একমাত্র ভরসা। এ ছাড়া অবস্থাগত কারণে পাশের সালথা, নগরকান্দা আলফাডাঙ্গা উপজেলার একটি অংশের রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসক জনবল ও প্রয়োজনীও উপকরণসহ নানা সংকটে মধ্যে দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
প্রতিদিন এখানে তিন শতাধিক রোগীদের বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিতে হয়। ৫০ বেডের হাসপাতাল হলেও প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০জন রোগী ভর্তি থাকে। এ কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স'র প্রশাসনিক কার্যক্রম ও চিকিৎসা সেবা ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি রোগীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২১টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে।
ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ কর্মরত আছেন শিশু কনসালটেন্ট হিসেবে, মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডাক্তার সৌমিত্র সরকার ও ডাক্তার শান্তনু ভট্ট্যাচার্য। এর মধ্যে ডাক্তার শান্তনু কর্মস্থল খামার পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে। ডাক্তার সংকটের কারণে মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি জরুরী বিভাগ ও বর্হিবিভাগে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান বেগম ও ডা. নুরুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. তাপস বিশ্বাস প্রশাসনিক দায়িত্বের পাশাপাশি অধিকাংশ সময় রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রোর অন্যান্য জনবলের মধ্যে সুইপার পোস্ট ৫ জন থাকলেও আছে ১জন, ওয়ার্ডবয় গত এক বছর ধরে শূন্য। এ কারণে হাসপাতাল পরিস্কার-পরিছন্ন রাখতে হাসপাতাল কতৃপক্ষ নিজেদের অর্থ দিয়ে এ সব কাজ করে আসছে। এক্স-রে মেশিনের নির্দিষ্ট কোন কক্ষ না থাকায় পুরানো পরিত্যাক্ত ভবনের একটি কক্ষে গত ১০-১২ বছর ধরে পড়ে থাকায় সেটিও অচল। আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন লোকবলের অভাবে গত ২-৩ বছর অব্যবহৃত হয়ে পড়ে আছে। এটিও নষ্ট হওয়ার পর্যায় চলে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. তাপস বিশ্বাস বলেন, ডাক্তার সংকটের কারণে বর্তমানে যারা আছেন তাদের ওপর প্রচন্ড চাপ পড়ছে। এখানে জুনিয়র কার্ডিওলজিষ্ট হিসেবে ডাক্তার রকিবুল কবিরের পোস্টিং থাকলেও গত দেড় বছর ধরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ডেপুটেশনে আছেন। ডাক্তার মনোয়ারা শারমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেড় বছর ধরে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে নিয়মিত ভাবে চিঠি দিয়ে লোকবলের সংকটের কথা জানিয়ে যাচ্ছি। কখনও কোন ডাক্তারের এখানে পোস্টিং হলেও অল্প কিছু দিনের মধ্যে বিভিন্ন কোর্স, ডেপুটেশন ও প্রশিক্ষণের জন্য চলে যায়।
তিনি আরও জানান, এখানে ক্যাশিয়ার, হিসাব রক্ষক ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পদ দীর্ঘদিন শূন্য। এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও অপারেশন থিয়েটার লোকবলের অভাবে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে । সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রোটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে চিকিৎসা সংকট কাটতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর