গত দুই দিন ধরে শিশু পাচার আতঙ্কে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে যশোর জেলায়। পৃথক ঘটনায় পাচার চক্রে জড়িত সন্দেহে চার নারী-পুরুষকে আটক ও তিন শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকাবাসির ধারণা আটক চার নারী-পুরুষ রোহিঙ্গা। তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। পুলিশের দাবি, আটককৃতদের কথাবর্তায় মনে হয়নি তারা রোহিঙ্গা।
যশোরে সদরের নলতা, ঝিকরগাছার পানিসারা, শার্শা উপজেলার দক্ষিন বুরুজবাগান, বেনাপোলের সাদিপুর, কাগজপুকুর থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঐ চার নারী-পুরুষকে শিশু চুরির অভিযোগে আটক করে। আজ শুক্রবার সকালে বেনাপোলের মাছ বাজারের নাসিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া প্রদীপ দাসের ছেলে কুমার(৫) ও আলেক হোসেনের ছেলে মুনছুর(৪) কে মিষ্টির প্রলোভন দিয়ে তুলে নেওয়ার সময় স্থানীয় জনগণ ফুলি বেগম(৬৫) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে দেয়। এলাকাবাসির দাবি- আটককৃত ঐ নারী রোহিঙ্গা, তিনি মিয়ানমার থেকে এসেছেন।
অন্যদিকে যশোরের কাগজপুকুর বাজার থেকে শিশু পাচারকারী সন্দেহে গিয়াস উদ্দিন নামে আরও এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া বেনাপোল চেকপোষ্ট ও সাদিপুর গ্রাম থেকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে শিশু নিয়ে যাওয়ার সময় আরও দুই নারীকে গ্রামবাসির সহযোগিতায় আটক করে পুলিশ। এসময় আটককৃতদের থেকে বেশ কিছু ভারতীয় রুপি ও বাংলাদেশি টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এই নারীও নাকি রোহিঙ্গা বলে এলাকাবাসি দাবি করেন।
ধরা পড়া নারী ও পুরুষের মধ্যে অনেকেই মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা বলে জেলায় আলোচনায় সৃষ্টি হয়েছে। যশোর জেলার শার্শা, বেনাপোল, ঝিকরগাছা, মনিরামপুরসহ পুরো জেলা জুড়ে ছেলে ধরা শিশু পাচারকারী আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই সাথে অভিভাবক মহলে চলছে এক চাপা আতঙ্ক। ভয়ে ছোট ছোট শিশুরা বাহিরে বের হচ্ছে না।
বিভিন্ন এলাকার তথ্য মতে, যশোরের বিভিন্ন উপজেলাতে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ বিভিন্ন ছদ্মবেশে গ্রাম-পল্লীতে প্রবেশ করছে। তারা শিশুদের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে ও চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করে বিভিন্ন বয়সী শিশুদেরকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে যশোরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু পাচারকারী সন্দেহে চার নারী-পুরুষকে আটক ও তিন শিশু উদ্ধারের ঘটনা ঘটল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক