বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় লাকি বেগম হত্যার ২১ ঘন্টার মধ্যে প্রধান আসামি ঘাতক স্বামী নূরুল আমিন হাওলাদারকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে শরণখোলা উপজেলার আমড়াগাছিয়া সাতঘর এলাকার নিজ বসত ঘরে নূরুল আমিন তার স্ত্রী লাকি বেগমকে (২৮) সিলিং ফ্যানের বাট দিয়ে পিটিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। পরে ঘাতক তার আট বছরের ছেলে জিহাদ ও দুই বছরের মেয়ে জেরিনকে নিয়ে সেখানে সরে পড়ে। পরে ঐ রাতে দুই সন্তানকে তার এক বোনের বাসায় রেখে পালিয়ে যায় নূরুল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরণখোলা থানার এসআই সুদেব পাল জানান, মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে নূরুল আমিনের অবস্থান সনাক্ত করা হয়। পরে এসআই আমির হোসেনসহ পুলিশের একটি দল নিয়ে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় রাত ১২টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে শরণখোলায় নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যার ব্যাপারে প্রধান আসামি নূরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাত আরও কয়েকজন আসামি রয়েছে। তবে, তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে লাকির ভাই বাদি হয়ে তার ভগ্নিপতিসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের নামে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের আব্দুল হক হাওলাদারের ছেলে নূরুলের সাথে ধানসাগর ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া কালিবাড়ি গ্রামের খলিল হাওলাদারের মেয়ে লাকির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে জিহাদ (৭) ও জেরিন (২) নামের দুটি সন্তান রয়েছে।
শ্বশুর-জামাই মিলে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের কেরেলায় ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। মাঝেমধ্যে নূরুল আমিন দেশে আসলেও স্ত্রী লাকির সাথে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। ঘটনার আগের দিন বুধবার শ্বশুর বুঝিয়ে-সুজিয়ে দেশে পাঠান জামাইকে। এরপর বাড়ি এসে স্বামী-স্ত্রী একঘরে থাকলেও ভোররাতের দিকে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে নূরুল আমিন পালিয়ে যায়।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক