আগামী বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর ট্যাক্স কমানোর দাবি জানিয়েছে নীলফামারী জেলা তামাক চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতি। একই সাথে তারা দেশীয় শিল্প সুরক্ষা আইন প্রণয়ন বহুজাতিক কোম্পানির পরিচালক পদে সরকারি আমলা না দেয়া এবং বহুজাতিক কোম্পানির সিগারেটের ওপর অতিরিক্ত করারোপ, তামাক চাষীদের ন্যায্যমূল্য প্রদান ও তাদের সুরক্ষার জন্য সরকারি নীতিমালা প্রণয়েনর দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার নীলফামারী প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে বক্তব্য সমিতির সভাপতি হামিদুল হক চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদক মাসুম ফকির। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ-সভাপতি শফিকুল্ ইসলাম তুহিন, ব্যবসায়ী নেতা আয়ুব হোসেন, কৃষক নেতা সালাউদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরে বেশির ভাগ মানুষ তামাক চাষের সাথে জড়িত। কারণ এখানে তামাক ছাড়া অন্য কোন ফসল ভালো হয় না। তামাক চাষ করেই চাষীদের জীবিকা নির্বাহ হয়। আর এ তামাক ব্যবহার হয়ে থাকে বিড়ি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে। বিড়ির ওপর সাম্প্রতিক সময়ে মাত্রা অতিরিক্ত করারোপের ফলে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার তামাক চাষী। রংপুর অঞ্চলের জন্য যা মারাত্মক আর্থিক সংকট তৈরি করছে। অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
তারা বলেন, বিড়ি একটি কুটির ও শ্রম ঘন শিল্প। এর সাথে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। প্রতিবেশী দেশ ভারতে যেখানে বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে বিড়ির ওপর অতিরিক্ত করারোপ করে এই শিল্পকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। ভারতে যে সব কারখানায় ২০ লাখ স্টিকের নিচে বিড়ি তৈরি হয় সেসব কারখানাকে কোন শুল্ক দিতে হয় না। অথচ বাংলাদেশে সব ধরনের কারখানাকে শুল্ক দিতে হয়। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে শুল্ক ১৮ গুণ বেশি। ভারতে এক হাজার বিড়িতে শুল্ক মাত্র ১৪ টাকা। বাংলাদেশে ২৫২ টাকা ৫০ পয়সা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিড়ির ওপর এই অসম শুল্কারোপের পেছনে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির হাত রয়েছে। তারা সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের হাত করে বিড়ির ওপর অতিরিক্ত করারোপে ভূমিকা রাখছে। বিড়ি ফ্যাক্টরিগুলোতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা কয়েক লাখ। সে তুলনায় সিগারেট ফ্যাক্টরিগুলোতে শ্রমিকের সংখ্যা নগন্য। বিড়ি এবং সিগারেটের পরিবেশগত বিপর্যয়ও সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক হিসেবে সিগারেট উৎপাদনে বছরে পরিবেশ গত ক্ষতির পরিমাণ বছরে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সিগারেট সব দিক থেকে অর্থনীতির ক্ষতি করলেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে শুধুমাত্র বিড়ি। এ সব পরিস্থিতির আলোকে আগামী বাজেটে বিড়ির ওপর শুল্ক কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানান তারা।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মে, ২০১৯/মাহবুব