নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে যথা নিয়মে বিতরণ করা হচ্ছে না ২০১২ সালের হাল নাগাদ পরবর্তী সময়ের ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইডি কার্ড বিলি করার পূর্বে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনাও মানা হয়নি। এ নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন কার্ড সংগ্রহকারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত নির্বাচন কমিশনের দেয়া অনেক নির্দেশই মানা হয়নি। এতে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহকারীদের। ভোটার আইডিকার্ড সংগ্রহ করতে অনেকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আইডিকার্ড সংগ্রহকারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত প্রায় ২০ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জের ১ থেকে ১০টি ওয়ার্ডে বিলি করা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)। কার্ডগুলো বিলি করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলরদের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা কাউন্সিলরদের নানা ভুল তথ্য দেয়ার অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলর।
এর আগে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক আব্দুল বাতেনের স্বাক্ষরিত নির্বাচন কমিশনের কিছু নির্দেশনা দিয়ে একটি পত্র প্রেরণ করেন উপজেলা নির্বাচন অফিসে। কিন্তু সে পত্রের অধিকাংশ নির্দেশনাই না মেনে সিদ্ধিরগঞ্জে (নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১০টি ওয়ার্ড) ভোটার আইডিকার্ড বিলি করা হচ্ছে।
ঐ নির্দেশেনা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আইডি কার্ড বিলি করার পূর্বে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাতে ব্যাপাক প্রচার চালাতে হবে। জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটির বৈঠকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে অবহিত করে তাদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রচার করা।
বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অবহিত করা, স্থানীয় পত্রিকায় প্রেস রিলিজ আকারে প্রচার করা, স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরদের মাধ্যমে স্ক্রল আকারে প্রচার করা, হাটবাজার, জনকীর্ণ স্থানে প্রয়োজনে মাইকিং এর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো। তবে কার্ড সংগ্রহকারীদের অভিযোগ কার্ড বিলি করার পূর্বে তেমন প্রচারণা চালানো হয়নি সিদ্ধিরগঞ্জে।
অন্যদিকে নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্টরা নয়, স্থানীয় কাউন্সিলরদের নিয়োজিত লোকদের কাছে থেকে নিতে হচ্ছে এনআইডি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইডিকার্ড সংগ্রহকারী জানান, আমি ৭নং ওয়ার্ডের এলাকার বাসিন্দা। আমি আমার বন্ধুর কাছ থেকে খবর পেয়ে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করেছি। আমাকে কিছু অর্থও দিতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মমিন মিয়া সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের সুপারভাইজারদের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডিকার্ড) বিতরণ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহায়তা নিয়ে থাকি। তবে কাউন্সিলরের লোকজন কোন কার্ড বিলি করছে না। কার্ড দেয়ার ক্ষেত্রে কেউ যদি অর্থ নিয়ে থাকে এ ধরণের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে। আমরা শতভাগ প্রচারণা চালিয়েছি। এ কার্ড বিলি করা অব্যাহত থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক