নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আম ছাড়াই উৎপাদিত হচ্ছে আমের জুস। রমজানে বেশি লাভের আসায় সুস্বাদু আমের জুসের নামে ভেজাল এই পানীয় বাজারজাত করা হয়। যেখানে নেই কোন আমের অস্তিত্ব। শুধুমাত্র বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল ও রং দিয়ে এই জুস তৈরি করা হচ্ছিল।
রবিবার বিকেলে ঠিক তেমনই একটি জুস কারখানায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১১ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটের একটি আভিযানিক দল। অভিযানে প্রায় ২০ লাখ টাকার ভেজাল জুস ধ্বংস করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল উত্তর পাড়া এলাকায় সাদিয়া ফুড এন্ড বেভারেজ কেমিক্যাল ইন্ড্রাষ্ট্রিজ নামক এই নকল জুস তৈরির কারখানায় অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির ৪জন কর্মচারীকেও আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার নাজমুল আলম (৩৫), ক্যামিস্ট রাজন হোসেন শিকদার (২২), মোঃ বিল্লাল হোসেন (২৭) এবং এনায়েত হোসেন (৩৪)।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম তাদেরকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন এবং প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়। তবে এসময় প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন না মালিক মোঃ আলমগীর হোসেন। তাকে আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১র অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব।
এছাড়াও আটক কৃতদের বরাত দিয়ে তিনি জানান কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে এই নকল জুস। আটককৃতের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে ১ লিটার জুস তৈরি করতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় হচ্ছে ২৫ টাকার মতো। এই জুস ডিলার কিনে নিচ্ছে ৪০টাকা দিয়ে। ডিলার আবার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে ৬০টাকা দরে। পরে সেটা খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে ৮০টাকায়।
মূলত বেশি লাভের জন্যই এই নকল জুস উৎপাদন করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা। এ সময় তিনি আরো বলেন, নকল এই জুসে নেই কোন আমের অস্তিত্ব। ১৫ প্রকার কেমিক্যালের সমন্বয়ে এই নকল জুস তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে সব থেকে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল হচ্ছে সোডিয়াম বেনজয়েড। যা কিনা মানব দেহের জকৃতকে একটা সময় বিকল করে দেয়।
পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটি এসব নকল জুস প্রতিনিয়ত বাজারে সরবরাহ করে আসছিলো। এমন যে কোন ভেজাল খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেলে সেগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মেজন তালুকদার নাজমুছ সাকিব।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক