ঠাকুরগাও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনয়নের চাপাতি গ্রামে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে লাগানো গাছ অবাধে কর্তন করা হচ্ছে। শনিবার ৩০টিরও বেশি ইউক্লিপটাস গাছ কর্তন করে নিয়ে যায় স্থানীয় কিছু যুবক, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
গ্রামটি জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে এবং পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার গাঁ ঘেঁষে হওয়ায় এখানকার অসাধু চক্রটি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে সরকারি গাছ চুরি করে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২ মাসে প্রায় ২ হাজার গাছ কর্তন করেছে। একটি গ্রামে প্রতি শুক্র ও শনিবার অফিস ছুটির দিনের সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে গাছ কর্তন করে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। সর্বশেষ চাপাতি গ্রামের নুর ইসলাম ও বুলু নামের ২ ভাই তাদের জমির পাশে গ্রাম্য রাস্তার ১৫/২০টি ইউক্লিপটাস গাছ স্থানীয় জাভেদ নামে এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে। ওই ব্যবসায়ী শুক্রবার সকালে ওই গাছ কেটে নিয়ে যান। তবে বুলু ও নুরু গাছগুলো নিজেদের লাগানো দাবি করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা সবকিছু জেনেও ভয়ে বাঁধা দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। মাস দুয়েক আগে ওই চক্রটিকে গাছ কাটায় বাঁধা দেওয়ায় রিপন নামে এক যুবককে পিটিয়ে জখম করা হয়। এ কারণে অনেকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করছেন না।
এ ব্যাপারে রাজাগাঁও ইউনিয়ন সচিব শফিকুল ইসলাম জানান, সামাজিক বনায়ন বা গ্রাম্য রাস্তার গাছ কাটতে হলে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ ওই গাছ কাটার উপযুক্ত মনে করলে ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশন উপজেলা পরিষদের সভায় অনুমোদন শেষে বন বিভাগ দাম নির্ধারণ করবেন। দাম নির্ধারণ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার টেন্ডার আহবান করবেন। টেন্ডারের পরে ওই গাছ কাটা যাবে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে অবাধে কেটে চলেছে সরকারি বৃক্ষ। এতে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকার জানান, শুক্রবার চাপাতি গ্রামের বুল নামে একজন রাস্তার পাশের গাছ কর্তনের সংবাদ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি গাছগুলি ওই ব্যক্তির জমিতে লাগানো। কেউ অবৈধভাবে গাছ কাটলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রুহিয়া থানার ওসিকে গাছ কর্তনের সংবাদ জানানোর পরও তিনি অজ্ঞাত কারণে নিরবতা পালন করেন। তিনি নিয়মের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গাছগুলোর মালিক যেহেতু চেয়ারম্যান বা স্থানীয় সরকার। নিয়ম অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবেন। এটা পুলিশের কাজ নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রাম্য রাস্তার পাশে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে লাগানো কোন গাছ টেন্ডার ছাড়া কর্তনের কোন সুযোগ নেই। কেউ অবৈধভাবে গাছ কর্তন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল