নরসিংদীর বেলাবতে কলেজ ড্রেস না পড়ায় ওমর ফারুক (১৮) নামে দ্বাদশ শ্রেণীর এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন অধ্যক্ষ বীরেশ্বর চক্রবর্তী। সোমবার বেলাব হোসেন আলী কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
আহত কলেজছাত্র বেলাব উপজেলার বাজনাব গ্রামের সৈয়দ বেনু মিয়ার ছেলে। তাকে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কলেজছাত্র ওমর ফারুক বলেন, সোমবার কলেজের ইউনিফর্মের মধ্যে শুধু প্যান্ট না পড়ার কারণে কলেজমাঠ থেকে অধ্যক্ষ বীরেশ্বর চক্রবর্তী তাকে ডেকে নেয়। এসময় ওমর ফারুক অধ্যক্ষের কাছে যাওয়ার সাথে সাথেই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সামনেই এলোপাথাড়ি চর-থাপ্পড় কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। এতে আমি বাম চোখে আঘাত পাই। পরে আমার সহপাঠীরা আমাকে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
বেলাব হোসেন আলী কলেজের ছাত্র রিপন বলেন, অধ্যক্ষ স্যার কোন অপরাধের জন্য আমাদের শাসন করতেই পারেন। কিন্তু উনি কলেজের শত শত ছাত্র-ছাত্রীর সামনে ফারুককে যেভাবে মারপিট করে বাম চোখ ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন আমরা এর বিচার চাই।
তিনি আরো বলেন, অধ্যক্ষ কর্তৃক শিক্ষার্থীর উপর মারপিটের প্রতিবাদে ও অধ্যক্ষকে প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা মানববন্ধন করেছি। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
আহত শিক্ষার্থীর বাবা সৈয়দ বেনু মিয়া বলেন, আমি গরীব মানুষ। রিকশা চালিয়ে ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছি। অপরাধ করলে স্যার শাসন করবেন কিন্তু এভাবে সকলের সামনে কিল-ঘুষি মারতে পারেন না উনি। উক্ত অধ্যক্ষের ঘুষিতে আমার ছেলের একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানি না কি হয়। আমি এর বিচার চাই।
বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. পান্না আক্তার বলেন, শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বাম চোখে একটু আঘাত পেয়েছে। তবে আঘাতটি তেমন গুরুতর নয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা শরমিন বলেন, হোসেন আলী কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছি। উক্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ বীরেশ্বর চক্রবর্তীকে কলেজে না পেয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল