১৭ অক্টোবর, ২০১৯ ১৩:১৩

১০ বছর পর শিকলবন্দী হতভাগ্য এক পিতাকে উদ্ধার করলো প্রশাসন

নাটোর প্রতিনিধি

১০ বছর পর শিকলবন্দী হতভাগ্য এক পিতাকে উদ্ধার করলো প্রশাসন

মানসিক ভারসাম্যহীন আমির আলীকে ১০ বছর শিকল বন্দী করে টয়লেটে রেখেছিল একমাত্র ছেলে ও তার পরিবার। অবশেষে তাকে উদ্ধার করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াবদা বাজারে।

আমির আলী নামের হতভাগ্য সেই ব্যক্তি ওয়াবদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিকল বন্দী আমির আলীকে উদ্ধার করে শিকল ভেঙ্গে তার বাড়িতেই ভাল একটি ঘরে তাকে বাসস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন। পরবর্তীতে এই রকম অমানবিক কাজ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। 

আমির আলির ভাগ্নে রহিম জানান, দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ তার মামার কোন চিকিৎসা না করিয়েই নোংরা এবং স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বন্দি করে রেখেছিলো তার ছেলে-মেয়েরা এবং স্ত্রী।

আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী এবং স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমির আলী ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে এমনভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। ১৪ বছর আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তারপর আর কোন চিকিৎসা করা হয়নি। আমির আলীকে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন জায়গায় বন্দী রাখার ব্যাপারে পরিবারের লোকজন ভুল স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে আর তাকে এমন ভাবে রাখা হবে না বলে ইউএনও ও এলাকাবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন জানান, দীর্ঘ ১০ বছর আমির আলীকে তার পরিবারের লোকজন একটি অস্বাস্থকর কুঁড়ে ঘরে তাকে শিকল বন্দী করে রেখেছিল। সেই ঘরে বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমতো। শুধু তাই নয় যে ঘরে আমির আলীকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল, সেই ঘরেই ছিল তার শোয়ার জায়গা এবং টয়লেট। যে পাত্র দিয়ে টয়লেটের কাজ সারতে হতো সেই পাত্র দিয়েই তাকে আবার পানি পান করতে হতো। ভাঙ্গা কুঁড়েঁ ঘরে পোকা মাকড়ের কামড় খেয়েই আমির আলী কাটিয়েছেন জীবনের ১০টি বছর।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর