রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করলেও দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া নেতাকর্মীদের আমলনামার হিসাব নিকাশ করছেন দলীয় হাইকমান্ড। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ক্লিনিক ইমেজের নেতারা বসবেন রংপুর জেলা ও মহানগরের মসনদে। এদিকে সম্মেলকে ঘিরে যাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙখলাবাহিনী।
তবে এবারে নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলীয় হাইকমান্ড নেতাদের অতীত কর্মকাণ্ডের হিসাব-নিকাশ করছেন। ফলে বর্তমান নেতৃবৃন্দের অনেকেই আতঙ্কে আছেন। যাদের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে পূর্বে আর্থিক অবস্থা এবং বর্তমান আর্থিক সম্পদের উৎস কী তা নিয়েও চলছে অনুসন্ধান। এমন খবর পাওয়া গেছে দলের কেন্দ্রীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্রে। শুধু তাই নয় বর্তমান সরকারের সফলতা সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচার প্রচারনায় বর্তমান নেতৃত্ব কেমন ভূমিকা রেখেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে এবারের সম্মেলনে পছন্দের নেতা নির্বাচিত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝেও চলছে নানান হিসাব নিকাশ।
আজ মঙ্গলবার রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে ক্লিন ইমেজ নিয়ে কে হচ্ছেন জেলা-মহানগরের সভাপতি ও সম্পাদক এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে নগরীর দেওয়ানবাড়ি রোডের মহানগর আওয়ামী লীগ ও বেতপট্টিস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে গোপনে বৈঠক করে দল ভারী করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে সম্মেলনে পদ প্রত্যাশীরা ব্যাপক শোডাউন করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। নগরীর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে নিজের ছবিসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের ঝুলিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে দলের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখবেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেলন হক ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রসঙ্গত: সর্বশেষ ২০০৭ সালে সাফিয়ার রহমান সাফিকে সভাপতি ও বাবু তুষার কান্নি মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। আর ১৯৯৭ সালে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হয়। ২০০৬ সালে রংপুর জেলা সম্মেলন আহ্বান করা হলে দলের দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে পণ্ড হয়ে যায়। পরে আহ্বায়ক কমিটি দ্বারা জেলা আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়। ২০০৯ সালে প্রয়াত আবুল মনছুর আহমেদকে সভাপতি ও এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। পরে আবুল মনসুর আহমেদের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন