১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৪:৪৬

৪৮ বছরেও নির্মিত হয়নি আজগরা বাজার গণহত্যার স্মৃতিস্তম্ভ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা:

৪৮ বছরেও নির্মিত হয়নি আজগরা বাজার গণহত্যার স্মৃতিস্তম্ভ

এখানেই গণহত্যা চালায় হানাদার বাহিনী

১৯৭১ সালের ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকাল বেলা। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আজগরা বাজার। আজগরা ধান বিক্রির জন্য বাজারটি প্রসিদ্ধ ছিলো। তখন আজরা, উত্তরদা ইউনিয়ন এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার কিছু গ্রামের মানুষ এখানে বাজার করতো। সেদিন ছিলো হাটবার। বাজারে উপচে পড়া ভিড়। হঠাৎ মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেলো পকিস্তানী দুইটি যুদ্ধ বিমান। মিনিট খানেক সময় পরেই আবার ফিরো এলো বিমান দুইটি। বাজারে বোমা ফেলা হলো। ধ্বংসলীলা নেমে এলো আজগরা বাজারে। যে যার মতো ছুটতে লাগলো চার দিকে। মুহূর্তে খালি হয়ে গেল বাজার। বীভৎস লাশ হয়ে মাটিতে পড়ে রইলো অর্ধ শতাধিক মানুষ। আহত হলো দুই শতাধিক। হাত-পা বিহীন অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন। এ দৃশ্যগুলো বর্ণনা করেন আজগরা বাজারের বর্ষিয়ান ব্যবসায়ী রমজান আলী। 

৭৬ বছর বয়সের রমজান আলী তখন তরুণ। তার দোকানের একশ' গজ সামনেই আজগরা তরকারি বাজারে এ বর্বর হত্যাকাণ্ড ঘটে। 

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও সেখানে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ হয়নি। নিহত ও আহতদের পরিবারের খোঁজ কেউ নেয়নি। এতগুলো মানুষের মৃত্যুদিনে কেউ স্মরণ সভারও আয়োজন করেনি। দক্ষিণ-পূর্ব লাকসামে আজগরা বাজারের বোমা ফেলার ঘটনা মানুষ আজো ভুলেনি। 

নিহতদের একজন পাওতলী গ্রামের সাদেক হোসেন। তিনি ওই গ্রামের রমজান আলীর ৪ ছেলে ৩ মেয়ের সবার ছোট ছিলেন। তার ভাই মোবারক হোসেন (৭০) জানান, তার মৃত্যুর পর স্ত্রী চলে যায়। তার ভাইয়ের স্মৃতিচিহ্ন বলে কিছু নেই।

নিহতদের আরেকজন কালিয়া চৌঁ'র আলী আশ্রাফের স্ত্রী আয়েশা খাতুন জানান, ২ ছেলে ৫ মেয়ে রেখে তিনি মারা যান। খেয়ে না খেয়ে তাদের বড় করেছি। কেউ কোনো দিন আমাদের খবর নেয়নি।
 
একজন আহত কালিয়া চৌ‘র গ্রামের রমজান আলী। তিনি এখন মানসিক বিকারগ্রস্ত।

লাকসাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল বারী মজুমদার জানান, আজগরায় পাক-হায়েনাদের বোমা হামলায় অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা উচিত।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর