পরকীয়ার প্রতিশোধে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পাবনার পিবিআই। গ্রেফতারকৃত ঘটনার মূল আসামি মো. হায়াত আলী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার করশালিকা পুরানপাড়া মো. গেদু শেখের ছেলে।
পাবনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন জানান, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় পরকীয়া প্রেমের কারণে ময়মনসিংহ জেলার ধুবাউড়া থানার বাকপাড়া বাজার এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে শহিদুল ইসলামকে (৩২) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের ভাই পাহাড়ী রাজু সাঁথিয়া থানায় একই এলাকার মৃত রহমান মোল্লার ছেলে মো. ঠান্ডু মোল্লা (৩৭), মো. ঠান্ডু মোল্লার স্ত্রী মোছা. ছালমা খাতুনকে (৩২) আসামি করে সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৪(১১)২০১৬।
পরে সাঁথিয়া থানা পুলিশ মামলাটি পাবনা সিআইডিতে প্রেরণ করে তদন্তের জন্য। সিআইডি মামলার তিন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে আসামি হায়াত আলী ও ঠান্ডু মোল্লাকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বাদী সিআইডির তদন্ত রিপোর্টে সন্তুষ্ট হতে না পেরে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি করে। বাদীর নারাজি বিজ্ঞ আদালত গ্রহণ করে মামলার পুনঃতদন্তের জন্য পাবনা পিবিআই এর উপর অর্পণ করে।
বাদী মামলার এজাহারে ও সিআইডি তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের মূল মোটিভ হিসেবে মামলার আসামি ঠান্ডু মোল্লা মামলার ভিকটিম শহিদুল ইসলামের নিকট হতে তাকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৪ লাখ টাকা গ্রহণ করে এবং তাকে টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য উক্ত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি উল্লেখ করে। কিন্তু পিবিআই তাদের তদন্তে ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে হত্যার মূল কারণ হিসেবে মামলার পলাতক আসামি ঠান্ডু মোল্লার স্ত্রী ছালমা খাতুনের সাথে ভিকটিম শহিদুল ইসলামের পরকীয়াকে উল্লেখ করে।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সবুজ আলী কিছুদিনের মধ্যেই তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে। এবং মামলার মূল আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। তারই অংশ হিসেবে বুধবার দিবাগত রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামি মো. হায়াত আলীকে শাহাজাদপুর থানার করশালিকা এলাকা হতে গ্রেফতার করে।
পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কান্তি চৌধুরী জানান, ঘটনার প্রায় ৩-৪ বছর পূর্বে ১ নং আসামি ঠান্ডু মোল্লা ওমানে থাকাবস্থায় তার স্ত্রী ছালমা খাতুনের সাথে মামলার ভিকটিম শহিদুল ইসলামের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। উক্ত বিষয়টি স্থানীয় লোকজন আসামি ঠান্ডু মোল্লাকে অবগত করলে সে তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে সত্যতা যাচাই করে এবং ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে দেশে ফিরে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি ঠান্ডু মোল্লার নির্দেশে ছালমা খাতুন ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে ময়মনসিংহ হতে পাবনার বেড়া সিএনবি স্ট্যান্ডে আসতে বলে। কথা মতো শহিদুল বেড়ায় আসলে তারা তাকে হত্যা করে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন