পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মোহাম্মদ রনি নামে এক কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তার পরিবারের আরও কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ রয়েছে।
পরিবারের দাবি, আট বছর আগে রনির পিতা হত্যায় পুলিশ এক আসামিকে গ্রেফতার করার জেরে এ কাণ্ড ঘটায় তারা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রনিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। এর আগের দিন উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ওই কলেজ ছাত্রের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃতে ইয়ানুছ আলী, রাসেল, জুয়েল, জাকির, আলী হোসেন, হালিম ও আলামিনসহ ১৫ থেকে ১৬ জনের একটি দল ওই হামলায় অংশ নিয়েছে বলে ভুক্তভোগি পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ইজারকান্দি গ্রামে আট বছর আগে খুন হন রব মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় মামলা করেন নিহতের ছেলে মাঈন উদ্দিন। শনিবার ওই মামলার এক আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে সংগঠনটির এক দল নেতাকর্মী বাদির বাড়িতে হামলা চালায়।
সূত্র আরও জানায়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মামলার বাদি মাঈন উদ্দিনের ঘরে ঢুকে মাঈন উদ্দিন, তার স্ত্রী, ছোট ভাই মোহাম্মদ রনি ও মা জাহানারা বেগমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এদিকে এ হামলার ঘটনার সময় কলেজ ছাত্র রনির এক হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে স্থানীয়ভাবে খবর ছড়িয়ে পড়লেও বিষয়টি সত্য নয় বলে পুলিশ দাবি করছে।
আড়াইহাজার থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলার আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করায় বাদির বাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্ত করছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
রনির কবজি কেটে ফেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, কবজি কেটে ফেলার অভিযোগ সত্য নয়। হামলাকারিরা ধারালো অস্ত্রের আঘাত করলে রনি হাত দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে তার হাতের দুই আঙ্গুলের মাঝখানে কেটে যায়। আমি ভিডিওটি দেখেছি। কবজি কাটা পড়েনি। খবর পেয়ে আহত রনিকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা