পাবনায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা এক রোগীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে আইইডিসিআর এ পরীক্ষার জন্য বলা হয়েছে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল জানান, বুধবার সকালে সদর উপজেলার গাছপাড়া এলাকা থেকে সর্দি জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে একজন রোগী পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হতে আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ তাকে পরীক্ষা করে উপসর্গ দেখে তাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহ করেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি।
আইইডিসিআরে তার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। চিকিৎসক আবু সালেহসহ ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা ৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীকেও কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, গাছপাড়া এলাকায় সন্দেহ ভাজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে নিজ বাড়িতেই আইসোলশনে রাখতে সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে, ওই ব্যক্তি বিদেশফেরত নন, বিদেশ ফেরত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শেও আসেননি। তার শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দীর্ঘদিনের বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
এদিকে, জেলায় জনসাধারণের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। বুধবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মাঠে নেমেছেন তারা। শহরের সব বড় বড় বিপনী বিতান বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে দফায় দফায় শহরের বিভিন্ন মোড়ে জনগণকে বাড়িতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানায় প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। দুপুরে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ও পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম পিপিএম মাঠে নেমে শহরের বিভিন্ন বাজার, টার্মিনাল ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে খোলা রাখা দোকান পাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেন। এসময় পরিস্থিতি বিবেচনায় বাইরে অকারণে ঘোরাঘুরি না করে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন তারা।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, বাড়িতে থাকার নির্দেশনায় বার বার সতর্ক করার পরও জনগণ অযথা ঘোরা ফেরা করছে। অনুরোধে কাজ না হলে প্রশাসন কঠোর হতে বাধ্য হবে। দিন মজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তার উদ্যোগ প্রশাসনের তরফ থেকে নেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুর থেকে পাবনা জেলায় মোটর সাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক ।
উল্লেখ্য, পাবনায় এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৩৩০০ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ৬৮৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা সম্ভব হয়েছে। বার বার চেষ্টা করেও অন্যদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনী।
পরিস্থিতি মোকাবেলায়, জেনারেল হাসপাতালে খোলা হয়েছে ২৫ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট। এ ছাড়া আমেনা মনসুর বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ভবন ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে অনেকটাই রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম