প্রেমিকের দেওয়া মোবাইল নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গলায় থাকা ওড়না দিয়ে মেয়েকে হত্যা করেছে ‘মা’ রহিমা বেগম। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় মাকে আটক করে পুলিশ।
রবিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আটক মোছা. রহিমা বেগম (৪৩) নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়া গ্রামের মো.বুলু মিয়ার স্ত্রী। মেয়ে মোছা. ফাতেমা (১৩) বড়মাগুড়া গ্রামের বিনোদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার বড়মাগুড়া গ্রামের মো. বুলু মিয়ার স্ত্রী মোছা. রহিমা বেগম গত ১ সপ্তাহ আগে একই ইউনিয়নের পাঠানগঞ্জ গ্রামে মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে গত তিন দিন আগে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। গত রবিবার সকালে বাড়ির পাশে আমগাছ থেকে আম নামানোর সময় মেয়ে ফাতেমার কোমরে একটি (স্কিনটাচ) মোবাইল দেখতে পায় মা রহিমা বেগম। পরে মেয়েকে মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ে ফাতেমা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। ঘটনার পর ‘মা’ ওই মোবাইল ফোনটি নিয়ে ঘরের সো-কেসে তালাবদ্ধ করে পাশে গ্রামের বড় মেয়ের বাড়িতে চলে যান। এরপর বিকেল বেলা মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে সোকেসের তালা ভাঙা দেখে মেয়ে ফাতেমাকে আবারও জিজ্ঞেস করলে সে কোন প্রতিত্তর করেননি। এরপর মা ও মেয়ের মাঝে কথাকাটাকাটির সময় মেয়েকে মারধর করেন। এরই এক পর্যায়ে মেয়ের গলায় থাকা ওড়না দিয়ে টান দেয় মা। পরে সেখানেই মেয়ে ফাতেমা মারা যায়। ঘটনার সময় নিহতের বাবা কাঁঠাল বিক্রয় করার জন্য বাজারে ছিলেন।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি অশোক কুমার চৌহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এলাকাবাসীর দেয়া খবরে ঘটনাস্থল হতে রবিবার রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার এবং ‘মা’ রহিমা বেগমকে আটক করে থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আটক মাকে গতকাল সোমবার কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, রাতেই মেয়ের চাচা মো. আলম হোসেন বাদী হয়ে মা রহিমা বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে, এলাকার কোন ছেলে ওই মেয়েটিকে মোবাইল ফোনটি দিয়েছে সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল