বাংলাদেশে পানি কচুর উল্লেখযোগ্য জাতগুলোর মধ্যে লতিরাজ কচু অন্যতম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ সবজি লতিরাজ কচু চাষ করে প্রথম বছরেই সাফল্য পেয়েছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার দক্ষিণ বাসুলী প্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম।
কৃষক হামিদুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ও পরামর্শে এ বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ২০ শতক জমিতে জয়পুরহাট থেকে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সংগৃহীত উন্নত জাতের ২৫০০ লতিরাজ কচু চারা রোপণ করা হয়। কচু চারা রোপণের প্রায় ২৫ দিন পরে তিনি ১৮-২০ টাকা কেজি দরে কচুর লতি বিক্রি শুরু করেন। প্রতি সপ্তাহে প্রায় একমণ কচুর লতি উত্তোলন করে এখন পর্যন্ত বাজারে প্রায় ৬ মন লতি বিক্রি করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রায় ২০ মণ লতি বিক্রি করতে পারবেন এবং ফসল সংগ্রহ শেষে কচু চারা হতে আরো প্রায় ৪৫ হাজার টাকা আয় করা যাবে। অন্যান্য ফসলের উৎপাদন খরচের চেয়ে লতিরাজ কচুতে অল্প পুঁজিতে ভালো লাভ পাওয়া হয়।
কয়েকজন কৃষক জানান, আয়রণ সমৃদ্ধ এ সবজির লতি, পাতা এবং কচু কোনটাই অপচয় হয় না। লতিরাজ কচু অনেকের প্রিয় সবজি। কচুপাতা শাক হিসেবে বিক্রি ও জৈব সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং কন্দটি সবজি হিসেবে বিক্রি হয়। অনেকে কম্পোস্ট সার তৈরিতে ব্যবহার করছেন কচুপাতা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, খানসামা উপজেলায় প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন প্রদর্শনীভুক্ত কৃষক-কৃষাণী উন্নত জাতের মুখী কচু, পানি কচু ও লতিরাজ কচু চাষের আওতায় এসেছেন এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে কচু চাষে সাফল্য পেয়েছেন।
খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আফজাল হোসেন জানান, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদেরকে লতিরাজ কচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। লতিরাজ কচুর ভালো ফলন ও বাজারের চাহিদার কারণে ইতিমধ্যে অনেক কৃষক চাষ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। কৃষকরা যদি কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ জাতের কচু চাষ করেন, তাহলে দেশের কৃষিতে নতুন দিগন্তের সূচনা উন্মোচিত হতে পারে এবং এটি বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা