২৭ আগস্ট, ২০২০ ২০:১০

নদীর ভাঙনে দেবে গেছে স্কুল ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

নদীর ভাঙনে দেবে গেছে স্কুল ভবন

বুধবার প্রমত্তা কালাবদর নদীতে স্কুল ভবনের একাংশ কাত হয়ে দেবে যায়

নদীর ভাঙন রোধে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলেও বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরবগী চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনটি রক্ষা করা যায়নি। বুধবার প্রমত্তা কালাবদর নদীতে স্কুল ভবনের একাংশ কাত হয়ে দেবে যায়। একাংশ এখনও দাঁড়িয়ে থাকলেও ওই ভবনে স্কুলের কার্যক্রম চালানোর মতো পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী বোরহানউদ্দিন মোল্লা। 

করোনাকালে স্কুল বন্ধ আছে। পরে সরকার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিলে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশেই একটি টিনশেড অস্থায়ীভাবে ক্লাস নেয়া হবে কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন। 

শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর রশিদ মোল্লা জানান, চরবগী চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম আগে একটি টিনশেড ঘরে পরিচালিত হতো। স্থানীদের দীর্ঘ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে ওই স্কুলের দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে দেয়। তখন কালাবদর নদী ছিল অনেক দূরে। গত ৩ বছরে কালাবদর নদীর ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় স্কুলটি হুমকিতে পড়ে। স্থানীয় এমপি পঙ্কজ নাথের বদান্যতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ৬ মাস আগে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ফেলে স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করে। কিন্তু জিও ব্যাগ ভাঙনরোধে তেমন কার্যকরী হয়নি।  

করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকলেও অবস্থা বেগতিক দেখে ২ মাস আগে স্কুলের যাবতীয় মালামাল পাশের একটি টিনসেড ঘরে স্থানান্তর করা হয়। গত বুধবার ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় চরবগী চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি কালাবদর নদীতে হেলে পড়ে। স্কুল অবকাঠামোর একাংশ এখনও দাঁড়িয়ে থাকলেও যে কোনো সময় পুরোপুরি নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে বলে আশঙ্কা তার।করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকলেও স্কুল খুললে ৩০০ শিক্ষার্থীর পড়ালেখা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন জানান, করোনাকালে স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ। এ কারণে আপাতত সমস্যা না হলেও স্কুল খুললে শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়বে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে স্কুলের পুরাতন টিনশেড ঘরে সাময়িক কার্যক্রম চালানো হবে। 

উপজেলা প্রকৌশলী বোরহানউদ্দিন মোল্লা জানান, ৩ বছর আগে স্কুলটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন নদী ছিল অনেক দূরে। ভাঙন তীব্র হওয়ায় স্থানীয় সংসদ সদস পঙ্কজ নাথের চেষ্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে স্কুল ভবনটি রক্ষার চেষ্ট করে। কিন্তু নদী ভাঙন সব চেষ্ট ব্যর্থ করে দিয়েছে। গত ২ মাস ধরে তারা স্কুল ভবনটির দিকে নজর রাখছিলেন। ভবনটি নিলামে বিক্রির টেন্ডারও দিয়েছিলেন তারা।

সবশেষ বুধবার ভবনটির একাংশ কাত হয়ে কালাবদর নদীতে পড়ে যায়। বাকি অংশও যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। স্কুল কমিটি যদি নদী থেকে দূরে কোন জমি দেয় তাহলে সেখানে নতুন ভবন নির্মানের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন উপজেলা প্রকৌশলী বোরহানউদ্দিন মোল্লা। 

আওয়ামী লীগ দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে স্কুলের জন্য নিরাপদ জমি নির্বাচন করে ভবন নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেবেন তিনি। আপাতত স্কুলের পুরাতন টিন সেডে যাবতীয় মালামাল স্থানান্তর করা হয়েছে। স্কুল খুললে সাময়িক ওই টিনশেডে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর