বাড়ির পাশে ডোবায় মাছ ধরতে সেচ দিতে গিয়ে ভোর রাতে ক্লান্ত হয়ে রেললাইনে শুয়ে বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া দুই সহোদরসহ তিন যুবকের উপর দিয়ে চলে গেলো মোহনগঞ্জগামী আন্তঃনগর ট্রেন ‘হাওর এক্সপ্রেস’।
আজ রবিবার ভোর ৫টার দিকে নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের স্বল্পদশাল গ্রামে এই মর্মান্তিক দুঘটনাটি ঘটে।
নিহতেরা একই এলাকার মৃত হেকিমের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬) ও ছোট ছেলে স্বপন মিয়া (২২) এবং বডু মিয়ার ছেলে মুখলেছ (৩২)। তারা মাছ ধরেই সংসার চালাতেন। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, রেললাইনের পাশে চারজন গতকাল শনিবার রাতে ডোবায় মাছ ধরতে আসেন। বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় তাদের আরেক বড় ভাইকে বাড়ি পাঠয়ে দেন তারা। সারা রাত সেচ কাজ শেষে এক সময় ক্লান্ত হয়ে গেলে রেল লাইনে শুয়ে বিশ্রাম করতে থাকেন। এক সময় ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে গেলে ভোর ৫ টার দিকে ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী আন্তঃনগর হাওর এক্সপ্রেসে কাটা পড়েন তিনজনই। নিহতের মা, স্ত্রী কবিতা ও ভাই জানায়, তাদের সংসার চলতো এই মাছ ধরেই। তাদেরকে ডোবার কাছে ত্রিপাল দিয়ে বিশ্রাম নিতে বলেছিলো পরিবারের লোকজন। রেল লাইনের বিশ্রামই হলো তাদের কাল।
সাহতা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন বাচ্চু বলেন, এদের পরিবারের কারও কোন অভিযোগ নেই। তাদের সংসারই চলে মাছ ধরে। এখন লাশ নিয়ে নেত্রকোনা যাওয়া আসা কি করে করবে। তাদের লাশগুলো দাফন করার জন্যই আমরা সকলেই সহযোগিতা করবো। তাই লাশগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর আক্তার বলেন, আমরা সকলেই লাশ দাফনে সহযোগিতা করবো। অসচেতনতার জন্যই এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
মোহনগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এস আই (নিরস্ত্র) সমর বড়ুয়া জানান, আমরা খবর পেয়েই লাশ উদ্ধার করেছি। এব্যাপারে একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা