২৯ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:২১

নভেম্বরের শুরুতেই খুলছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

নভেম্বরের শুরুতেই খুলছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

করোনা সংক্রমণের কারণে সাত মাস বন্ধ থাকার পর বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান খুলে দেয়া হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই উদ্যানে আবার দেশি-বিদেশি পর্যটকরা প্রবেশ করতে পারবেন। 

আজ বৃহস্পতিবার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, লাউয়াছড়ায় সীমিত সংখ্যক পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে। পর্যটকদের সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য বিধি গুলো মেনে চলতে হবে। এছাড়া লাউয়াছড়ায় প্রবেশের সময় সকল পর্যটকের মুখে মাস্ক থাকতে হবে। ভেতরে প্রবেশ করে তাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করতে হবে। 

জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে ১৮ মার্চ লাউয়াছড়া জাতিয় উদ্যানে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ করে বন মন্ত্রণালয়। দেশের সাতটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান অন্যতম। জীব-বৈচিত্র্যের দিক থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের সমৃদ্ধতম বনগুলোর একটি। আয়তনে ছোট হলেও এ বন দুর্লভ উদ্ভিদ এবং বন্যপ্রাণীর এক জীবন্ত সংগ্রহশালা। 

লাউয়াছড়া বনে দেখা মেলে পৃথিবীব্যাপী বিলুপ্ত দ্বার প্রান্তে চলে আসা বন্যপ্রাণী উল্লুক। এখানে রয়েছে ৪৬০ প্রজাতির প্রাণ-বৈচিত্র্যের ভেতর ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির অর্কিড, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ১৭ প্রজাতির পোকামাকড়।

মৌলভীবাজার রেঞ্জের ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর আয়তনের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১২৫০ হেক্টর এলাকাকে ১৯৯৬ সালে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশী বিদেশী পর্যটকরা এই উদ্যানে আসতে শুরু করেন। 

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহ-সভাপতি মো. খালেদ হোসেন বলেন, শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হলো লাউয়াছড়া। তাই লাউয়াছড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার স্থানীয় ট্যুর গাইডরা বেকার হয়ে পরেছিল। আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্টের মালিকরা। সামনে পর্যটনের ভরা মৌসুম। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

তবে লাউয়াছড়া জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ আন্দোলনের আহ্বায়ক জলি পাল বলেন, লাউয়াছড়া বনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকায় বনের সতেজ পরিবেশ ফিরে এসেছে। প্রাণীরা পেয়েছে তাদের নির্ঝঞ্ঝাট আবাস স্থল। আগের মতো ডালাও ভাবে পর্যটক প্রবেশ করলে সেই পরিবেশ আবার নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এখন থেকে যাতে সীমিত সংখ্যক পর্যটক বনে প্রবেশ করে কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়টি দেখতে হবে।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে বিভাগীয় বন সংরক্ষক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘যত কম পারা যায় পর্যটক প্রবেশের জন্য আমরা বলে দিয়েছি। করোনার কারণে মনে হয় না এতো বেশী পর্যটক আসবে। তবে দেখি কি হয়, যদি দেখি বেশী সংখ্যক মানুষজন আসছে তা হলে আমাদের অথরিটির সাথে কথা বলে একটা লিমিট করে দেব।’

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর