বরিশালে প্রতারণা মামলায় কানিজ জোহরা নামে এক ভুয়া আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরন করে পুলিশ। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর পরেশ সাগর মাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই কুদ্দুস।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরীর সিএন্ডবি রোডের বাসিন্দা কানিজ জোহরার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রূপাতলী বসুন্ধরা হাউজিংয়ের বাসিন্দা নাসরিন আখতার।
মামলার এজাহারে নাসরিন আখতার অভিযোগ করেন, এক বছর আগে বরিশাল আসার পথে একটি লঞ্চে কানিজ জোহরার সাথে তার পরিচয় হয়। জোহরা নিজেকে হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে তার কোন বোন নেই জানিয়ে বাদীকে বোন বলে সম্বোধন করে। এরপর প্রায় সময় ফোনে যোগাযোগ রাখতো কানিজ। এক পর্যায়ে বাদীর রূপাতলী বাসা থেকে তার অগোচরে অগ্রণী ব্যাংকের একটি চেক নিয়ে যায় কানিজ (যার হিসাব নম্বর ০২০০০০৪০৪১৯৪৫, চেক নম্বর-০২৩৮৬৫৬)। ওই চেক ফেরত চাইলে সে জানায়- ব্যবসায়ীক চুক্তি হবে তাই ৪টি স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর প্রয়োজন। পরে কানিজ বাদীর সন্তানদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। পরে চেক ফেরত চাইলে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়।
সম্প্রতি একটি সিআর মামলায় জামিন করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নেয় কানিজ। গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলার তারিখে কানিজ আদালতে না আসায় তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে জানতে পারেন কানিজ আইনজীবী পরিচয় দানকারী প্রতারক এবং প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে নিলয়, কোথাও কানিজ, কোথাও সুরমা, কোথাও রতনা, তমা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন পুরুষদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরি করে কৌশলে ডেকে বিবস্ত্র করে অর্থ দাবি করে। অন্যথায় সেসব ছবি ভাইরাল করার হুমকি দেয়। এর আগে ঢাকার আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় কয়েকমাস হাজত বাস করে সে।
কানিজ জোহরাকে গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কোতয়ালী মডেল থানার এসআই কুদ্দুস বলেন, প্রতারণার মামলায় গত শনিবার সন্ধ্যায় পরেশ সাগর মাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর কানিজ জোহরা যে আইনজীবী নন, তা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, কানিজ জোহরা কোন আইনজীবী নন। অথচ তিনি নিজেকে হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। এভাবে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন