দিনাজপুরে প্রাচীন কারুকার্যে ৩০০ বছর আগে মোগল আমলের নির্মিত একটি মসজিদ আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যদিও স্থানীয় মুসল্লীরা সংস্কার করে এখনো নামাজ আদায় করেন। তবে ঐতিহাসিক এ মসজিদটি প্রাচীন আমলের সবচেয়ে ছোট মসজিদ এবং এর দরজা তিনটিও খুব ছোট।
মোগল আমলের এই তিন গম্বুজ ওয়ালা মসজিদটি ইতিহাসে সংরক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মসজিদটি দিনাজপুরের বিরলের শহরগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের নাগরবাড়ী মৌজার মুন্সিপাড়ায় অবস্থিত। বিরল শহর থেকে ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত সীমান্ত ঘেষা গ্রামে সড়ক পথে বিভিন্ন এলাকার দর্শণার্থীরা ছুটে আসেন এখানে।
জানা যায়, বিরলে শহরগ্রাম ইউপির মুন্সিপাড়ায় তৎকালীন ভারত উপমহাদেশে বাণিজ্যের জন্য আগত ইরানের বণিক ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে বসতি স্থাপন করেন। এরই ফলশ্রুতিতে তারা এখানে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদ ঘর নির্মাণ করেন।
মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে তারা তিনটি বড় গম্বুজ ও চারটি ছোট গম্বুজ নির্মাণ করে। নিখুঁত হাতে মিম্বরের মধ্যে সে আমলের কারুকাজ করা হয়। একটি সারির ছোট পরিসরে মসজিদ ঘরটি নির্মাণে সে সময়ে চুন ও সুড়কি ব্যবহার করা হয়। তবে এর নির্মাণ কাল ও নির্মাণ শ্রমিক সংখ্যা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন নাই।
প্রচলিত ধারণা রয়েছে, ইরানের বণিকদের ৪ ভাইয়ের মধ্যে ২ ভাই আব্দুল জলিল ও আব্দুল কাদের এখানে বসবাসের সময় তারাই এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। তাদের মৃত্যু কবে হয়েছে না জানলেও মসজিদের পাশের কবর দেখিয়ে গ্রামের মুরব্বীরা সবাই বলেন, এটাই তাদের কবর।
বর্তমান মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী মসজিদটির সামনে টিনশেড সম্প্রসারণ করে একসঙ্গে শতাধিক মানুষের নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা করেছেন। আর প্রতি বছরে এটি চুন কাজ করে নতুনত্ব বজায় রাখার চেষ্টাও করেন। মসজিটি ৮ বিঘা জমির ওপর দাড়িয়ে আছে। এর মধ্যে মসজিদের পাশে প্রাচীন দুটি কবর রয়েছে এবং পেছনে একটি বড় পুকুর রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই মোগল আমলের মসজিদটিই হয়তো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ। দেশের কোথাও এত ছোট প্রাচীন মসজিদ আছে বলে আমার জানা নেই।
বিডি প্রতিদিন/এমআই