প্রজনন মৌসুমে রাজশাহীর বাঘার আমবাগানে আশ্রয় নেয়া শামুখখোল পাখিকে নিরাপদ রাখতে এবার বাগান মালিকরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বন অধিদফতরের অনুন্নয়ন খাত থেকে পাঁচজন বাগান মালিককে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রদান করছে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাদের টাকা দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ পাওয়া বাগানিরা হলেন খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের মঞ্জুর রহমান, সানার উদ্দিন, সাহাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও ফারুক আনোয়ার।
শনিবার সকালে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের সেই আমবাগানে পাখির অবস্থা পর্যবেক্ষণে আসেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা। তারা কৃষকদের সাথে মতবিনিময় শেষে পাখির বাসার জন্য সরকারের বরাদ্দ করা ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা প্রদানের বিষয়টি জানান।
গত কয়েক বছর ধরে প্রজনন মৌসুমে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের অন্তত ৩০টি আমগাছে বাসা তৈরি করে আসছে হাজার হাজার শামুখখোল। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম হলেও পাখিগুলো ডিসেম্বর পর্যন্ত বাচ্চা লালনপালন করে। গত বছরে প্রজনন মৌসুমের শুরুতেই বিপত্তির শুরু হয়। সেসময় আম বাগানের পাঁচ মালিক চেয়েছিলো বাসাগুলো ভেঙ্গে দিতে। তাদের দাবি, পাখি থাকার কারণে গাছে আম ধরছে না। ফলে প্রতি বছর লোকশান গুনতে হচ্ছে। স্থানীয় পাখিপ্রেমী কিছু মানুষ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানালে ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন বাগান মালিকরা। ১৫ দিনের মধ্যে বাসা না ছাড়লে পাখিদের বাসা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণাও দেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। এতে বাসাগুলো ভাঙা যাবে না মর্মে নির্দেশনা প্রদান করেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে ওই এলাকা কেন পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির সদস্যরা পাখির বাসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৮টি আমগাছ চিহ্নিত ও ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন