২৭ জানুয়ারি, ২০২১ ১৩:৫৩

গাঁজা ব্যবসার প্রতিবাদ করায় খুন হন মাহতাব: পিবিআই

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

গাঁজা ব্যবসার প্রতিবাদ করায় খুন হন মাহতাব: পিবিআই

আসামি ফরহাদ ও সেলিম

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মাহতাব উদ্দিন মাতু (৬০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গাঁজা ব্যবসার প্রতিবাদ করায় তাকে খুন করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত এক আসামির আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে এ তথ্য জানিয়েছে পিবিআই। হত্যাকাণ্ডের ৫৫ দিন পর এ হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন পিপিএম জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিসহ অন্যান্য আসামীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আসামিরা ফিশারীর মাছের খাবারের সাথে গাঁজা এনে এলাকায় ব্যবসা করতো। গাঁজা ব্যবসার প্রতিবাদ করায় মাহতাবকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী পাহারা দেওয়ার জন্য ফিশারীতে গেলে আসামীরা প্রথমে মাহতাবকে ফিশারির টিনসেড ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে দা দিয়ে মাহতাবের মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশ ফিশারির নৌকায় করে নিয়ে রেললাইনের পাশে ফেলে রাখে। 

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও জানান, কটিয়াদী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মাহতাব একই গ্রামের একটি ফিশারিতে পাহারাদারের কাজ করতেন। গত ৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে ফিশারিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে নিখোঁজ হন। রাত ১০টার দিকে ফিশারির মালিকপক্ষের শহিদুজ্জামান সেলিম মোবাইল ফোনে মাহতাবের বাড়ির লোকজনকে জানান যে, মাহতাব ফিশারিতে যায়নি। রাত ১২টার দিকে মাহতাবের স্ত্রী বানেছা খাতুনসহ পরিবারের অন্যরা ফিশারির মালিকপক্ষের আব্দুর রহমানের বড়িতে গিয়ে মাহতাবের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি আশপাশে খুঁজতে বলেন। পরদিন ভোর ৬টার দিকে পার্শ্ববর্তী দশ কাহনিয়া বন্দের রেল লাইনের পশ্চিম পার্শ্বের একটি জমিতে মাতুর লাশ পাওয়া যায়। পরে মাহতাবের ছেলে নূর উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কটিয়াদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কটিয়াদী থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন গত ৭ ডিসেম্বর দুজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। তারা হলেন কটিয়াদী উপজেলার নিমক পুরুড়া গ্রামের কাছুম আলীর ছেলে বোরহান (২৫) ও বনগ্রাম কর্মকার পাড়ার মৃত আলী হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমান।

অপরদিকে লাশ পাওয়ার পর পিবিআই কিশোরগঞ্জের ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ হত্যার বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ১৭ জানুয়ারি পিবিআই মামলাটি স্ব উদ্যোগে গ্রহণ করে এসআই সুমন মিয়াকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এসআই সুমন ভিকটিম মাহতাবের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৫ জানুয়ারি সন্দেহজনক হিসেবে কটিয়াদী উপজেলা দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুল লফিতের ছেলে ফরহাদকে (২৫) গ্রেফতার করেন। পরদিন একই গ্রামের ফালু মিয়ার ছেলে শহিদুজ্জামান সেলিমকেও (৪৪) গ্রেফতার করা হয়। ফরহাদ গত মঙ্গলবার বিকালে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আক্তারের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তার দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার একই গ্রামের মৃত খেলু মিয়ার ছেলে রইস উদ্দিন ওরফে লাইসুকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়।

এ মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে পিবিআই জানায়।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর