কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বায়তুল আজগর সাত গুম্বুজ মসজিদ একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। মসজিদটিতে কারুকাজ করা হয়েছে মোগল, তুর্কি ও পারস্যের সংমিশ্রণে। মসজিদটি নির্মাণের সময় ইট, বালু, সিমেন্টের পাশাপাশি চিনামাটি ও টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে।
উপজেলা সদর হতে দুই কিলোমিটার পশ্চিমে গুণাইঘর গ্রামে নান্দনিক মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে এখানে আসেন শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে।
২০০২ সাল হতে মসজিদটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০৫ সালে এটির উদ্বোধন হয়। সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মন্জুরুল আহসান মুন্সী মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির স্থপতি শিল্পী শাহিন মালিক। ক্যালিগ্রাফি, কারুকাজ ও নকশার শিল্পী বশির মেসবাহ।
মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সূত্র জানায়, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট, প্রস্থ ৩৬ ফুট। সাতটি গুম্বুজ, চারটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৮০ ফুট। ভেতরে রয়েছে ঝাড়বাতি। মসজিদটির ভেতরে শতাধিক মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। বারান্দায় নামাজ পড়তে পারেন দুই শতাধিক মুসল্লি।
মসজিদের সামনে আরো পাঁচ শতাধিক মুসল্লির নামাজ পড়ার সুযোগ রয়েছে। মসজিদের উপর বিভিন্ন আলোক সজ্জা রয়েছে। যা দূর থেকে নজর কাড়ে। মসজিদে লেখা আল্লাহ শব্দটি রাতের বেলা জ্বলতে থাকে। মসজিদটির সাথে ফুলের বাগান রয়েছে। ভেতরে ও বাইরে অসংখ্য চাঁদ ও তাঁরা আঁকা রয়েছে। এখানে বাংলাতে আটটি ক্যালিওগ্রাফি রয়েছে। আরবিতে লেখা রয়েছে কোরআনের চার কুল। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ৩ শত ৫০ মন চিনামাটির টুকরো ও ২৫০টি গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে।
মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শেষ বিকালের আলো নান্দনিক মসজিদটির পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে ছড়িয়ে আছে। সূর্যের আলো পড়ে শুভ্র রঙের মসজিদ ঝলমল করছে। আবুল কালাম নামের একজন পরিবার নিয়ে এসেছেন পাশের উপজেলা মুরাদনগর থেকে। তারা ঘুরে ঘুরে মসজিদ দেখছেন। তিনি বলেন, গ্রামে এত সুন্দর মসজিদ নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।
মসজিদের খতিব মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী বলেন, বায়তুল আজগর সাত গুম্বুজ মসজিদটি নির্মাণ শৈলীর দিক থেকে সারা দেশের মধ্যে অন্যতম। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে। বিশেষ করে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মুসল্লি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে আসেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই