পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে এখন দৃষ্টি নন্দন নানা শৈল্পিক সৌন্দর্য্য শোভা পাচ্ছে। এমন ভূমি অফিস নজর কেড়েছে সবার। আগে যে ভূমি অফিসে ঢুকলেই অজানা শংকায় স্থানীয়দের মন দুরু দুর করে উঠতো সেই ভূমি অফিসে এখন বদলে গেছে সবকিছু।
অফিসের আঙ্গিনা জুড়ে আগত সেবা গ্রহীতাদের বসার জন্য দৃষ্টি নন্দন বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাছের নিচে দেয়া হয়েছে ইট সিমেন্টের গোল আসন । দেয়ালগুলোতে লিখা হয়েছে ভূমি সংক্রান্ত নানা তথ্য। একটি নতুন ঘর নির্মাণ করে স্থাপন করা হয়েছে সেবা কুঞ্জ। রাতে নানা রংয়ের বৈদ্যুতিক আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে অফিসের চারপাশ। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন রংপুর বিভাগে এমন দৃষ্টিনন্দন ভূমি অফিস আর নেই। স্থানীয়রা বলছেন, 'ভূমি অফিসে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের সাথে সেবার মানও বেড়েছে। মাত্র কিছুদিন আগেও ভূমি অফিসটা ছিল ভূতুরে বাড়ির মতো। চারিদিকে ছিল দালালদের আনাগোনা। মাত্র দুই বছরে বদলে গেছে সবকিছু।'
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, '২০১৯ সালে ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন সহকারি কমিশনার মাসুদুল হক। তিনি যোগদান করার পর মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে অফিসটির সংস্কার কাজে হাত দেন। দ্রততম সময়ে অফিসের অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়। সেবার মান বাড়িয়ে দিয়ে অফিসটিকে দালাল মুক্ত করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাথে আলোচনা করে নির্ধারিত সময়ে সেবা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।'
সরকারের ‘হাতের মুঠোয় ভূমি সেবা’ কার্যক্রমকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানারকম কার্যক্রম হাতে নেয়া হয় । তিন হাজার প্রিন্টেড ব্যাগে নথিপত্র সংরক্ষন করার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে এই অফিসে ২০ মিনিটেই সেবা গ্রহিতারা পাচ্ছেন খতিয়ান ও ডিসিয়ার। আগে ৪৫ দিন লাগলেও এখন ২৮ দিনেই মিলছে ইনামজারি। দশদিনেই মুক্তিযোদ্ধাদের মামলা নিস্পত্তি করা হচ্ছে। প্রবাসী ও বিশেষ মামলাগুলো ৭ দিনের মধ্যে নিস্পত্তি হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া বাজার এলাকার মেহেদী হাসান মামুন জানান, 'আগে অনেক ভোগান্তি হতো । বর্তমানে আমরা অনেক ভালো সেবা পাচ্ছি। অফিসটি রুচিসম্মত করে সাজানো হয়েছে। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।'
সহকারি কমিশনার মাসুদুল হাক জানান, 'সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে হাতের মুঠোয় ভূমি সেবা কার্যক্রমে নাগরিকরা সহজে সেবা পাচ্ছেন। সরকারের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের জন্য তেঁতুলিয়া ভূমি অফিসকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এই এলাকাটি একটি পর্যটন এলাকা । তাই পর্যটনের বিষয়টি মাথায় রেখে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। অফিসিয়াল কার্যক্রম দালালদের প্রভাবমুক্ত করা হয়েছে। এখন কর্মকর্তাদের সাথে মানুষ নির্ভয়ে কথা বলতে পারছে।'
উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু জানান, 'প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভালো কিছু করার চেষ্টায় আছি। গত দুই বছরে ভূমি অফিসের চেহারা বদলে গেছে। স্থানীয় অধিবাসিরা ভালো সেবা পাচ্ছেন। একটি ভূমি অফিস এমন হতে পারে মানুষ আগে ভাবতে পারতোনা। অবৈধ দখলে থাকা অনেক সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়েছে।'
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির