ঢাকায় শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈ (১১) নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকর্তা ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের অর্থপেডিক্স ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ ডা. সিএইএস রবিন, তার স্ত্রী রাখি দাস এবং তাদের সহযোগী বাসুদেবের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা দায়ের হয়েছে। শিশুটির চাচা তপন বাড়ৈ বাদী হয়ে শনিবার সকালে শিশু নির্যাতন দমন আইনে বরিশালের উজিরপুর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
শিশু নিপা বাড়ৈ (১১) উজিরপুরের জামবাড়ি এলাকার মানসিক প্রতিবন্দ্বী ননী বাড়ৈর মেয়ে। তার মা ২ বছর আগে অন্যত্র বিয়ে করে। ২ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে নিপা মেঝ। অভাবের সংসারে বেঁচে থাকার জন্য ৬ মাস আগে ডা. সিএইএস রবিনের শ্যামলীর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ শুরু করে নিপা। এর পর বিভিন্ন সময় চিকিৎকের স্ত্রী রাখি দাস নানা অজুহাতে তার উপর শারীরিক নির্যাতন করতো। কখনও গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, কখনও ছুরির খোঁচা আবার কখনও দেয়ালে ঠোকা হতো তার মাথা। কখনও তার গলা চেপে শ্বাস রোধ করার চেষ্টা করতেন গৃহকর্তার স্ত্রী। অব্যাহত নির্যাতনে নিপা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে নির্যাতনকারী লোক মারফত গত (২৪ ফেব্রুয়ারি) বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে উজিরপুরের জামবাড়ি নিপার গ্রামের বাড়ির কাছে একটি দোকানের সামনে ফেলে যায়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তার স্বজনরা। কিন্তু শিশুটি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। শুক্রবার ভোররাতে শিশুটিকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাপাত্তা হয় তার স্বজনরা। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১১টায় উজিরপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তৌহিদ।
নিখোঁজের ২৩ ঘণ্টা পর শনিবার ভোর ৪টার দিকে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে নিপাকে উদ্ধার করে পুলিশ।বিডি প্রতিদিন/ফারজানা