মাদারীপুরের কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে সাদিয়া (২১) নামে এক গৃহবধূর চোখ উৎপাটনের চেষ্টাসহ মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ডাসার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার।
এদিকে, থানা পুলিশের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নির্যাতনের ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী পরিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার সকালে ভুক্তভোগী পরিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম বনগ্রাম গ্রামের কৃষক বারেক চৌকিদারের মেয়ে সাদিয়া বেগম। তার সঙ্গে একই উপজেলার বালিগ্রাম এলাকার গুঙ্গিয়াকুল গ্রামের কাসেম মোল্লার প্রবাসী ছেলে নাসির মোল্লার প্রায় এক বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় স্বামী নাসির মোল্লা স্ত্রী সাদিয়া বেগমকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
কিন্তু সাদিয়ার পরিবার দরিদ্র হওয়ায় দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। এতে করে স্বামী নাসির মোল্লা ক্ষিপ্ত হয়ে গত শনিবার দুপুরে পরিবারের লোকজন নিয়ে সাদিয়ার দু’চোখ উৎপাটনের চেষ্টাসহ মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতিত গৃহবধূর পরিবার খবর পেয়ে উপজেলার ডাসার থানা পুলিশের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় নির্যাতিত সাদিয়ার মা পারভীন বেগম বাদী হয়ে স্বামী নাসির মোল্লাসহ আটজনকে আসামি করে ডাসার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে রয়েছে।
মামলার বাদী পরভীন বেগম কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, আমার মেয়ে জামাই নাসিরের দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে দিনের পর দিন প্রচণ্ড মারধর করে এবং তার পরিবারের লোকজন নিয়ে আমার মেয়ের দু’চোখ উৎপাটনের চেষ্টা করে। তাই আমি তাদের নামে মামলা করেছি।
তবে অভিযুক্ত নাসির মোল্লার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার এসআই মো. রিপন মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে ওই গৃহবধূকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছি এবং নির্যাতনের বিষয়ে মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই