রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা বাজারে অর্ধকোটি টাকার জমি দখলে নিতে তৎপরতা শুরু করেছেন এক বিএনপি নেতা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার (ইউনিয়ন ভূমি-উপসহকারী কর্মকর্তা) রবিউল ইসলাম সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেও তা মানছেন না বিএনপি নেতা ও স্থানীয় বাধাইড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনা। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তবে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনার দাবি, তহশিলদার রবিউল ইসলাম তার প্রতিপক্ষ জালাল উদ্দিনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। তিনি জমিটি বৈধভাবেই কিনেছেন বলে দাবি করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুণ্ডুমালা বাজারে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২৬ শতক জমির মালিক ডা. জালাল উদ্দিন ও তার ভাই অধ্যাপক জাহিদুর রহমান। তাদের জমিতে মার্কেট নির্মাণ করে ইতিমধ্যে দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ জমির একাংশ নিয়ে ডা. জালাল উদ্দিন ও তার ভাই জাহিদুর রহমানের মধ্যে আদালতে মামলা চলছে। ওই জমিটিরই একাংশ কিনেছেন দাবি করে তা দখলে নিতে তৎপরতা শুরু করেন বিএনপি নেতা হেনা। আর এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গত ৩ মার্চ বিএনপি নেতা হেনার নেতৃত্বে জমি দখলের চেষ্টা করা হলে দখলে থাকা ডা. জালাল উদ্দিনের ছেলেরা বাধা দিতে গেলে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এনিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে আদালতে।
ডা. জালালের ছেলে আহম্মদ হোসাইন অভিযোগ করেন, জমি নিয়ে চাচা জাহিদুরের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছে। আদালতে মামলাও চলমান। এরই মধ্যে তার চাচাকে ভুল বুঝিয়ে কৌশলে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনা জমিটির ১৩ শতাংশ কিনেছেন। এখন বিরোধপূর্ণ জমিটি দখলের পাঁয়তারা করছেন তিনি। নানাভাবে হুমকি-ধামকিও দিচ্ছেন।
আহাম্মদ হোসাইন জানান, তার চাচা বিরোধপূর্ণ জমি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই গত নভেম্বর মাসে বিএনপি নেতার কাছে বিক্রি করেছেন বলে জেনেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা এখন সেই জমি দখলের চেষ্টা করছেন। লাঠিয়াল বাহিনী নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে হুমকি-ধামকি ও হামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপি নেতা হেনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিরাপত্তা চেয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এর প্রেক্ষিতে আদালত থেকে এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিবেদন চেয়ে আদেশ দেন। ইউএনও সরেজমিন বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে তদন্তপূর্বক মুণ্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তাকে (তহশিলদার) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তহশিলদার রবিউল ইসলাম সরেজমিন তদন্ত করে ইতিমধ্যে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাতে জমির মালিকানা জালাল উদ্দিনের হাতে আছে বলে উল্লেখ করেন। তবে বিষয়টি মানছেন না বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনা। তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, তিনি তানোর থেকে বদলি হয়ে গেছেন। প্রতিবেদনটি পড়ে দেখার সময় পাননি। তাই এই বিষয়ে কিছু তার জানা নেই। নতুন যোগ দেওয়া কর্মকর্তা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক