গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের বাংগুরী গ্রামে এক মাস ধরে কোরবান আলী (৭০) নামের এক মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সড়কে ঘর তুলে অবরোধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাতায়াতের সড়ক থেকে টিনশেডের ঘরটি সরিয়ে নিতে কালিয়াকৈর থানায় প্রতিপক্ষ ৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামি বড় ভাইয়ের দুই ছেলে মো. শাহালম (৪০), মো. জাকির হোসেন (৫০),একই গ্রামের রশিদ খানের ছেলে মো. সজিব (২৮) এবং জাকির হোসেনের স্ত্রী রুলিয়া আক্তার (৪০), রশিদ খানের স্ত্রী সুরিয়া বেগম (৪৫)। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা কোরবান
আলী গত ১৬ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সড়কটি প্রতিবন্ধকতা অবমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি আবেদন করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
এলাকাবাসী জানান, বাংগুরী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. কোরবান আলীর সাথে তার বড় ভাই সানোয়ার হোসেনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে । প্লটের দক্ষিণ পাশে বড় ভাই সানোয়ার হোসেন পাকা ঘরবাড়ি তুলে এবং ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলী ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কোনবান আলী পাশের চাচাতো ভাইয়ের বাড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করলেও কিছু দিন আগে তার চাচাতো ভাইয়ের পরিবারের সাথে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের ঝগড়া হয়। এতে চাচাতো ভাইয়েরা বাড়ির উপর
দিয়ে যাতায়াত করতে নিষেধ করে দেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের।
ফলে বড় ভাইয়ের ঘরের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রায় চার ফুট খালি জায়গা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সড়ক তৈরি করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই মুক্তিযোদ্ধার ভাতিজা জাকির হোসেন, শাহালাম মিলে সেই যাতায়াতের সড়কের উপর গত ১ মার্চ একটি টিন শেডের ঘর ও একটি টয়লেট তৈরি করে সড়কে যাতায়াত বন্ধ করে দেন।
ফলে মুক্তিযোদ্ধা নিজের বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোন সড়ক না থাকায় অবরোধ হয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা একাধিকবার শালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ বিষয়টি মীমাংসার জন্য থানা পর্যন্ত গড়ায়।
কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী দুই পক্ষকে ১৩ মার্চ থানায় ডাকেন। এতে মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলীর পক্ষ হাজির হলেও ভাতিজা শাহালম ও জাকির হোসেন হাজির না হওয়ায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মুক্তিযোদ্ধা মো. কোরবান আলী জানান, ঘর তুলার সময় বাধার সৃষ্টি করা হলে ভাতিজারা লাঠিশোটা দিয়ে আমাকে মারধর করে জখম করে। এ সময় আমার বসত ঘর থেকে স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমার যাতায়াতের সড়কটি একটি টিনশেড ঘর তুলে যাতায়াত বন্ধ করে আমাদের পরিবারের সকল সদস্যদের অবরোধ করে রাখে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, এঘটনায় দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হলে বিবাদি পক্ষ শাহালম ও জাকির হোসেন আসেনি। ফলে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন