১২ এপ্রিল, ২০২১ ২০:৫২

বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল; ওয়ার্ড ছাড়িয়ে ডায়রিয়া রোগীর স্থান গাছ তলায়, নানা অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল; ওয়ার্ড ছাড়িয়ে ডায়রিয়া রোগীর স্থান গাছ তলায়, নানা অভিযোগ

বরিশালে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডায়রিরা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তারা ভিড় করছেন বরিশালে ডায়রিয়া চিকিৎসার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডের বেড, মেঝে, বারান্দা ছাড়িয়ে রোগীরা ঠাই নিয়েছেন মূল ভবনের বাইরে খোলা স্থানে, এমনকি গাছতলায়ও। তারা পাচ্ছেন না ডায়রিয়া রোগীর অতিপ্রয়োজনীয় স্যালাইন এবং ওষুধ সহ অন্যান্য সেবা। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে তাদের। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যদিও সাধ্য মতো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা এবং রোগীদের স্যালাইন ওষুধ দেয়ার কথা বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে পর্যাপ্ত জায়গা এবং লোকবল স্বল্পতার কারণে রোগীদের প্রত্যাশা পূরণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আরপিও ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রেজওয়ানুল আলম রায়হান বলেন, পানির মাধ্যমে রোটা ভাইরাস শিশুদের সংক্রামিত করে। আর বড়দের সংক্রামিত করে পানিবাহিত সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া। গরম পেলে ব্যাকটেরিয়া বেশি ছড়িয়ে পড়ে পানির মাধ্যমে। নোংরা থাকা, ঠিকভাবে সাবান দিয়ে হাত না ধোয়া এবং পানি ফুঁটিয়ে পান না করার কারণে গরমের এই সময়ে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তিনি বলেন, আমরা খাওয়ার পরে সাবান দিয়ে হাত ধুই। কিন্তু নিয়ম হলো খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।

এই গরমে সরকারিভাবে মানুষের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং পানি ফুঁটিয়ে পান করার উপর গুরুত্বারোপ করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রায়হান। 

সোমবার দুপুরে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়িয়ে রোগীর স্থান হয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়, মূল ভবনের বাইরে খোলা স্থানে, এমনকি হাসপাতাল চত্ত্বরের গাছতলায়। গাছ তলায় এবং মূল ভবনের বাইরে খোলা আকাশের নিচে থাকা রোগীরা জানান, হাসপাতালে জায়গা না পাওয়ায় তারা বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। 

জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্জ আয়শা আক্তার জানান, সরকারিভাবে যে ওষুধ এবং স্যালাইন বরাদ্দ আছে সেগুলো রোগীদের দেয়া হচ্ছে। লোকবল স্বল্পতা থাকলেও সাধ্যমতো ওয়ার্ড পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করছেন তারা। 

জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মাত্র ৪ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এর মধ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে দুটি শয্যা এবং ২টি শয্যা মহিলা ওয়ার্ডে। সেখানে সোমবার দুপুর পর্যন্ত রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন অর্ধ শতাধিক। ৪ জনের জায়গায় ৫০ জনের অধিক রোগী থাকলে কিছু সংকট তো হবেই। লোকবল এবং স্থান স্বল্পতার কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না বলে তিনি জানান। 

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০জন ডায়রিয়া রোগী। গত মার্চে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৫১ জন ডায়রিয়া রোগী। চলতি এপ্রিলে আজ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৫১২জন রোগী। 

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর