টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে দুই ট্রাক চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) বেলাল হোসেন ও নৈশ প্রহরী আল আমীনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় চাল বোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত পাচার হওয়া আরেকটি ট্রাকের ৩৬০ বস্তা চালের সন্ধান পায়নি কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খাদ্য গুদাম থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বুধবার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা বাদী হয়ে থানায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা, নৈশপ্রহরী ও অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ দুপুরে আসামিদের টাঙ্গাইল কোর্ট হাজতে প্রেরণ করে।
জানা যায়, ভুঞাপুর খাদ্য গুদামের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে মঙ্গলবার দুপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চাল ট্রাকযোগে পাশের ঘাটাইলের হামিদপুরের একটি রাইস মিলে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। পরে পুনরায় বিকালে আরেকটি ট্রাকে চাল বোঝাই করা হয়। এতে ১৪ মেট্রিকটন চাল ছিল।তবে ওই চাল উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ডিলার নজরুল, ফরহাদ ও দিলীপ ও অর্জুনা ইউনিয়নের ডিলার সাখায়াত হোসেন লেবুর চাল বলে দাবি করে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ডিলারদের রেখে যাওয়া চাল বলে লিখিত দেন।
ভুঞাপুর খাদ্য গুদামের নৈশ প্রহরী আল আমিন তার লিখিত জবাবে জানায়, ওসিএলএসডি কর্মকর্তা স্যারের মৌখিক নির্দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল প্রথমে একটি ট্রাকে ভর্তি হয়ে চলে গেছে। পরে আবার আরেকটি ট্রাকে চাল ভর্তি করা হয়।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা বলেন, ট্রাকে পাচার হওয়া এবং জব্দ হওয়া ট্রাক ভর্তি বাসমতি নামের ওই বস্তার চাল গত মার্চ মাসে খুলনা থেকে ভুঞাপুর গুদামে এসেছে। চালগুলোর বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি বরাদ্দের জন্য। এর মধ্যেই উনি (খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা) কিভাবে পাচার করছেন, সেটা জানা নেই। এ বিষয়ে দুইজনের নামসহ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুঞাপুর থানার ওসি আব্দুল ওহাব বলেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলাটি দুদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় জেলা দুদক সমন্বয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাসহ দুজনকে ট্রাক ভর্তি চাল জব্দ করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। পাচার হওয়া আরেক ট্রাকের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই