২০ এপ্রিল, ২০২১ ২০:১২

আওয়ামী লীগ নেতাকে হামলার মামলায় তিতাসকর্মী কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ নেতাকে হামলার মামলায় তিতাসকর্মী কারাগারে

আওয়ামী লীগ নেতা এবং তার পরিবারের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলার আসামি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মী সৈয়দ মামুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ধরালো অস্ত্রসহ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে শফিসহ চারজন আহত হন। আহাতরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) ওই ঘটনায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা থানায় মামলা করা হয়। মামলা নং-৬। 

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল যায়। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার অন্যতম আসামি সৈয়দ মামুনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। সৈয়দ মামুন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত। স্থানীয়রা জানায়, এর আগেও তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই আলফাডাঙ্গার ২নং গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফির সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৩নং ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবরের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে বাবরসহ তার অনুসারী-অনুগামীরা শফিসহ তার লোকজনদের মারধরসহ হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। পরে সোমবার  সাইফুল ইসলাম বাবরের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জন ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র নিয়ে গোপালপুরে শফির বাড়িতে ঢুকে তার ভাই রবিউল ইসলামের নাম ধরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। পরে রবিউল ইসলাম ঘর থেকে বের হয়ে গালিগালাজের কারণ জানতে চাইলেই অভিযুক্তরা রবিউলের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তার মাথার ডান ও বাঁ পাশে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। 

ঘটনার সময় রবিউলের চিৎকার শুনে বাড়ির পাশের স্কুল মাঠ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা শফি দৌঁড়ে আসলে অভিযুক্তরা তাকেও ঘিরে ধরে মারপিট করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এ সময় সবার চিৎকার শুনে শফির চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সুমন খান  ও শফির ভাইয়ের স্ত্রী  রুমা বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে আহত করা হয়। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা আওয়ামী লীগ নেতার ঘরে ঢুকে মালামাল ভাঙচুর ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা এসে আহতদের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বর্তমান তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়েছে। মামলা হয়েছে এবং তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।'

তিতাস কর্মী মামুনের বিষয়ে জানতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ্ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা এখনো জানি না। তবে কেউ যদি এ ধরনের ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিষয়টি জেনে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ 

এ ব্যাপারে তিতাসের সংস্থাপন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আকন্দ মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাকরির যে বিধান রয়েছে সেই আলোকে কেউ অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রথমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তার সাজা হলে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর