ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পটুয়াখালীর বাউফলের বেশিরভাগ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চল ৬ থেকে ৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানির তোরে ভেঙে গেছে কয়েক শত কাঁচা ও পাকা রাস্তা। তলিয়ে গেছে অনেক মাছের ঘের ও পুকুর। ক্ষতি হয়েছে রবি শষ্যেরও। চরাঞ্চলসহ নিম্ন আয়ের মানুষরা পড়েছে চরম বিপাকে।
সরেজমিন বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ, কেশবপুর, ধুলিয়া, কালাইয়া, কাছিপাড়া, কনকদিয়া এবং বগা ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, ইয়াসের প্রভাব এবং পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে তেঁতুলিয়া এবং লোহালিয়া নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৬ থেকে ৮ ফুট ফুঁসে উঠেছে। এর প্রভাবে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাই ৬ থেকে ৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
কালাইয়া ইউনিয়নের চর কালাইয়া এবং শৌলা এলাকার নিম্নাঞ্চল ৫ থেকে ৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কেশবপুর ইউনিয়নের চর মমিনপুর প্রায় ৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ওই ইউনিয়নের কালামিয়ার বাজার থেকে মমিনপুর ও হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তার প্রায় ২৫টি স্থান ভেঙে গ্রামের জনবসতিতে পানি ঢুকে পড়েছে। পানিতে প্রায় দুই শতাধিক পুকুর এবং শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদি এলাকার লঞ্চঘাটের পল্টুন পানির তোরে মাঝ নদীতে রয়েছে। ধুলিয়া ইউনিয়নের চর বাসুদেবপাশা, কাছিপাড়ার চরপাকডাল, বগার বালিয়া এলাকা লোহালিয়া এবং তেঁতুলিয়া নদীর ফুঁসে ওঠা পানিতে ৬ থেকে ৭ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত এলাকার প্রায় সকল পুকুর এবং মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
ফলে মাছ চাষিরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়া পানির তোরে ক্ষতি হয়েছে মুগ ডাল, মসুর ডাল, মরিচ এবং তিগ তিল-তিশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির রবিশষ্যের। দেখা গেছে, উল্লেখিত ইউনিয়নগুলোর বেশিরভাগ অংশেই বেড়িবাঁধ নেই। যতটুকু আছে সেটকুও মেরামতের অভাবে ভগ্নদশা হয়ে রয়েছে। এদিকে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে যে সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার প্রায়টাই ধংস হয় গেছে। বিনষ্ট হয়েছে কেশবপুরের গুচ্ছ গ্রাম।
বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান হিমু জানান, বেশিরভাগ রবিশষ্য উঠে গেছে। তবে এখনো মাঠে বেশ কিছু রবিশষ্য রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এখন বলা যাচ্ছে না। আমাদের লোক মাঠে রয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করছেন।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার জানান, আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। প্রয়োজন হলেই আমরা মাঠে নেমে পড়ব।
বিডি প্রতিদিন/এমআই