২৫ জুন, ২০২১ ১৮:৫৮

যেখানে ৫০ কেজিতে এক মণ!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

যেখানে ৫০ কেজিতে এক মণ!

৪০ কেজিতে এক মণ, যা সবারই জানা। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় আমবাজার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে এই হিসাবটা বদলে গেছে! সেখানে আমচাষিদের জিম্মি করে ৫০ কেজিতে এক মণের হিসাব করা হচ্ছে

৪০ কেজিতে এক মণ, এই হিসাবেই সব বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় আমবাজার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে হিসাবটা বদলে গেছে! সেখানে আমচাষিদের জিম্মি করে ৫০ কেজিতে এক মণের হিসাব করা হচ্ছে। আর এই হিসাবেই চাষিদের আম বিক্রি করতে বাধ্য করছেন আড়তদাররা। তবে আড়তদাররা ৫০ কেজিতে এক মণ আম কিনলেও ব্যাপারীদের কাছে ৪০ কেজিতে মণ দরেই বিক্রি করছেন। এতে করে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছেন আড়তদাররা।

জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে কানসাট আমবাজারে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। আমচাষিরা বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই আমের দাম কম, অন্যদিকে ৪০ কেজিতে মণ হওয়ার কথা থাকলেও আড়তদাররা নিচ্ছেন ৫০ কেজি করে।

হাকিম নামে এক আমচাষি বলেন, এক ভ্যান গুটি জাতের আম নিয়ে বিক্রির জন্য বসেছিলাম। বিক্রি করা হয়েছে ৩৫০ টাকা মণ দরে। ওজন করার পরে জানতে পারলাম,  ৫০ কেজিতে ধরা হচ্ছে একমণ আমের হিসাব। হিসাব করে পাওয়া গেছে মাত্র ১ হাজার ৪০০ টাকা। এ টাকা দিয়ে ভ্যান ভাড়া দেব, না নিজে খাব, বুঝতে পারছি না। 

জসিম নামে আরেক আম আমচাষি বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার থেকে বসেছিলাম খিরসাপাত আম নিয়ে। দাম বলছে ১,২০০ টাকা মণ, আর কতক্ষণ বসে থাকা যায়। এ ছাড়া আমের মণ ৪০ কেজিতে নেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ কেজিতে নিচ্ছেন আড়ৎদাররা। আমের ওজন ৪০ থেকে ৪২ কেজিতে মণ করার দাবি জানান তিনি। 

আমিনুল নামে এক আড়তদার বলেন, আম হচ্ছে কাঁচাপণ্য। দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছাতে ওজন কমে যায়। এ জন্যই প্রধানত প্রতিমণে ১০ কেজি আম বেশি নেওয়া হচ্ছে। 

৫০ কেজি ওজন নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই নিচ্ছে, তাই এভাবে নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব জানান, ২০১৬-২০১৭ সালে আমের সঠিক ওজন নেওয়া ও ডিজিটাল মিটারে ওজন করার ব্যপারে আন্দোলন করা হয়। একসময় আড়তদারদের বাধ্য করা হয় ডিজিটাল মিটার ব্যবহারে। সেসময় ৪৫-৪৬ কেজিকে এক মণ হিসাবে আম কেনা শুরু করেন আড়তদাররা। পরে জেলা প্রশাসনের সভায় লিখিতভাবে জানানো হয় ৪০ কেজিতে এক মণ হিসাব করার। কিন্তু জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কোথাও এর বাস্তবায়নে ভূমিকা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই। 

এদিকে আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক উমর ফারুক টিপু জানান, কানসাট বাজারে আমের মণ ৪০ কেজিতেই ধরা হচ্ছে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে পৌঁছাতে ওজন কমে যায়, তাই ৫-৬ কেজি আম বেশি নেওয়া হয়। 

তিনি বলেন, কৃষকের কাছে ৫০ কেজিতে মণ নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। 

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাকিব আল রাব্বি বলেন, আমের মণ ৪০ কেজির বাইরে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর