বগুড়ার হাটে হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। দাম কম-বেশির মধ্যেও কোরবানি দাতারা বিভিন্নভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ঈদুল আজহা একেবারে কাছে চলে আসায় কোরবানির পশু জবাই ও চামড়া ছড়ানোর জন্য ধারালো ছুরি, রামদা ও কাঠের গুড়ির কদর বেড়েছে।
এবার বগুড়ায় দেশীয় ছুরির দাপট বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার কামাড়শালাও এখন দারুন ব্যস্ত। ২০ টাকা থেকে হাজার টাকায় মিলছে বিভিন্ন মানের ছুরি ও রামদা। তবে করোনার আগে চীনের তৈরি ধারালো এসব ছুরি রামদার দাপট থাকলেও এবার করোনা অতিমারির কারণে দেশীয় ধারালো ছুরি রামদায় ঝুঁকেছে বগুড়ার কোরবানি দাতারা।
বগুড়ায় কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করার পর এবার ভিড় বাড়ছে ছুরি, চাপাতি, বটি, দা’র দোকানে। কেউ বা আবার শখের বসে কামারশালায় ভালমানের কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য রামদা-ছুরি তৈরি করে নিচ্ছেন। ছুরি, বটির দোকানগুলো থেকে শুরু করে কামারশালায় বেশ ভিড় লক্ষ করা গেছে। দেশীয়ভাবে তৈরি ছুরিই বেশি দেখা যাচ্ছে বগুড়ার বাজারে। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে বগুড়ায় সেভাবে চীনের তৈরি ধারালো ছুরি রামদা পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের চীনের অবিক্রিতগুলোই বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
বগুড়া শহরের চেলোপাড়া, ১ নম্বর রেলঘুমটি, ২ নম্বর রেলঘুমটি, ৩ নম্বর রেলঘুমটি, কাঁচা লোহার জন্য ভাংড়ি পট্টি, কাঁঠাল তোলা, চেলোপাড়া, কলোনিসহ কয়েকটি এলাকায় বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া ছাড়ানো, গোস্ত কাটা, জবাই করার বিভিন্ন ধরনের বড় ছুরি, রামদা, চাকু, বটি, কাঠের গুড়ি। বগুড়ার বাজারে দেশীয়ভাবে তৈরি ছুরি দেখা যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস হলেও চীনের ও বার্মার কথা বলে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন নামের প্যাকেট ছুরি।
দেশীয়ভাবে তৈরি বিভিন্নমানের ছোট ছুরি ২০ থেকে ৬০ টাকা, একটু বড় ছুরি ৬০ থেকে ১০০ টাকা, রামদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, বটি বিভিন্ন মানের আকারের ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চা পাতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় ধারালো ছুরি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এর সাথে বার্মিজ ও চীনের তৈরি সিলভার রঙের মান অনুযায়ী চকচকে চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, ছোট ছুরি ১০০ টাকা, পশু জবাই করার ছুরি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, দা ৩০০ থেকে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিরা বলছে, করোনা ভাইরাসের আগেই এসব ধারালো ছুরি নিয়ে এসেছে। কোনো কোনো স্থানে আবার চীনের কথা বলে দাম বাড়িয়েও বিক্রি করছে। ছুরি, বটির সাথে দাম বেড়েছে গাছের গুড়ির। ছোট বড় বিভিন্ন দামের গাছের গুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৮০০ টাকা করে।
বগুড়া শহরের ২ নম্বর রেলঘুমটির কাছের এক কাঠের গুড়ি ও ছুরি বিক্রেতা জানান, কোরবানি উপলক্ষে ছুরি, দা, রামদার বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন দামের এবং মানের ছুরি বিক্রি হচ্ছে। দেশীয়ভাবে তৈরি মোটা শীটের ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। কাঠের গুড়িও বিক্রি করা হচ্ছে। তেতুঁল কাঠের ছোট গুড়ি ৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর বড়গুলো আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, বগুড়ায় এবার কোরবানির পশুর প্রয়োজন ৩ লাখ ২৬ হাজার। সেখানে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার। সেই হিসেবে এবার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে ৪৭ হাজার। গত ঈদে এ জেলায় প্রায় ৩ লাখ ১২ হাজার পশু জবাই করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই