বগুড়ার শেরপুরে স্ত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ব্যবসায়ী স্বামীকে মারপিট করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পল্লী চিকিৎসক শাহীন আলম ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, জেলার ধুনট উপজেলার বিলচাপরী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শাহীন আলম। পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাগড়া চকপোতা গ্রামে থাকেন। সেই সঙ্গে পাশের সাধুবাড়ী পাকারমাথা নামক স্থানে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ওষুধের ব্যবসা করে আসছেন।
কিন্তু বেশকিছুদিন ধরে এই পল্লী চিকিৎসক মামুরশাহী গ্রামের ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেনের স্ত্রীকে আসা-যাওয়ার পথে উত্যক্ত করতে থাকে। এমনকি তাকে কু-প্রস্তাবও দেন গ্রাম্য চিকিৎসক শাহীন আলম। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে ওই গৃহবধূকে যৌন হয়রানি করছেন তিনি। একপর্যায়ে ঘটনাটি তার স্বামীকে জানান ওই গৃহবধূ। এরপর তার স্বামী ফিরোজ হোসেন এহেন কর্মকাণ্ড পরিহার করার জন্য অভিযুক্ত শাহীন আলমকে বলেন।
এর জের ধরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে শেরপুর শহরে অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন। কিন্তু সাধুবাড়ী পাকারমাথায় পৌঁছামাত্র তার ওপর হামলে পড়ে গ্রাম্য ডাক্তার শাহীন আলম ও তার লোকজন। এমনকি ওই ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারপিট করেন তারা। এসময় তার নিকটে থাকা পঞ্চাশ হাজার ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই অতর্কিতভাবে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তাকে বেধড়ক মারপিটসহ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তিনি প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন। স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন মিঠু ও রজীব উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তেমন লেখাপড়া নেই ওই গ্রাম্য চিকিৎসকের। এছাড়া ওষুধ বিক্রি করার সরকারি কোনো অনুমোদনও নেই। এরপরও দোকান খুলে বসে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়া ইতিপূর্বে ওই গ্রাম্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নারী রোগীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বরাবরই টাকার জোরে পার পেয়ে যান। তাই এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক শাহীন আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে আমাকে হয়রানি করার জন্য। তবে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি কথা স্বীকার করেন তিনি।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগটি তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর