২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:৫৯
‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর আবেদন

পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যা ও লাশ গুমের মামলা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যা ও লাশ গুমের মামলা

আতিকুর রহমান মোর্শেদ

টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ বছর আগে তার দ্বিতীয় স্ত্রী সৈয়দ আমেনা পিংকিকে হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই হত্যা মামলায় মোর্শেদকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর জন্য আজ বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করবে পুলিশ। 

মামলায় মোর্শেদ ছাড়াও তার প্রথম স্ত্রী সোমা ওরফে মনা, মুন্সি তারেক পটন ও তার স্ত্রী লিনা, পারভেজ খান রনি, সোহেল ওরফে বাবু, অনন্ত সুত্রধর, রাফসান ও আয়নাল মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আর ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করা হয়। আদালতের নির্দেশে গত মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি করা হয়। 

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই হত্যা মামলায় মোর্শেদকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর জন্য আজ বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করা হবে। মোর্শেদকে গত ১৯ আগস্ট একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিনই তার বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে দুইটি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলায় টাঙ্গাইল কারাগারে আছেন।

পুলিশ জানায়, মোর্শেদের দ্বিতীয় স্ত্রী আমেনার বাবা সৈয়দ শরিফ উদ্দিন বাদি হয়ে গত ২৪ আগস্ট টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।  

শরিফ উদ্দিন অভিযোগ করেন, ২০১২ সালের জুন মাসে তার মেয়ে আমেনাকে মোর্শেদ অপহরণ করে বিয়ে করেন। তাদের ছয় বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। দুই স্ত্রী থাকায় মোর্শেদের পরিবারে মাঝেমধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এর জেরে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি রাতে ওই এলাকার এক বাসায় দাওয়াতের কথা বলে মোর্শেদ আমেনাকে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে অন্য আসামিদের সহযোগীতায় মোর্শেদ আমেনাকে হত্যা করে লাশ গুম করেন।  মোর্শেদের ভয়ে তিনি মামলা করতে সাহস পাননি। পরে মোর্শেদ চলতি বছরের ১৯ আগস্ট গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত এ হত্যার বিষয়ে থানায় কোনও মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল কিনা তার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য টাঙ্গাইল সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। কোনও মামলা বা জিডি হয়নি বলে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন আদালতে প্রতিবেদন দেন। আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করার জন্য টাঙ্গাইল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, এই হত্যা মামলায় মোর্শেদকে গ্রেফতার দেখানোর পর তদন্তের প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হতে পারে। এছাড়া হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ দুই যুবলীগ নেতা হত্যা, ছাত্রদল নেতা রেজা হত্যা, ব্যবসায়ী তুহিন হত্যা মামলার আসামি। এছাড়াও একাধিক চাঁদাবাজি, ধর্ষণের চেষ্টা, অস্ত্র মামলাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মোর্শেদের বিরুদ্ধে বাহিনী গঠন করে শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আগে টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত খান পরিবার অংশের সহযোগী ছিলেন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনের আগে খান পরিবার বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দেন।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর