চাঁদপুর কচুয়া উপজেলার পলাশপুরে সম্পত্তিগত বিরোধে গৌরাঙ্গ দেবনাথ (৬০) নামে ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে জীবন দেবনাথ (৪৩) ও হারাধন দেবনাথ (৩৮) নামে দুই ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিয়াউর রহমান এই রায় প্রদান করেন।
হত্যার শিকার গৌরাঙ্গ দেবনাথ কচুয়া উপজেলার পলাশপুর গ্রামের দেবনাথ বাড়ীর বাসিন্দা। যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত জীবন দেবনাথ ও হারাধন দেবনাথ একই বাড়ীর জগদিশ দেবনাথের ছেলে। মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট দুপুরের দিকে দেবনাথ বাড়ীতে জীবন দেবনাথ, হারাধন দেবনাথসহ তাদের পরিবারের লোকজন চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিতে যায়। এসময় গৌরাঙ্গ দেবনাথ, সংকর দেবনাথ ও জোসনা বাঁধা দিতে গেলে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়।
এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ জীবন দেবনাথ ও হারাধন দেবনাথ তাদের হাতে থাকা লোহার শাবল ও বাঁশের লাঠি দিয়ে গৌরাঙ্গ দেবনাথসহ ৩ জনকে আক্রমণ করে। ৩ জনই গুরুতর আহত হন। তন্মধ্যে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তাক্ত জখম হন গৌরাঙ্গ দেবনাথ। তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় গৌরাঙ্গ দেবনাথের ছেলে দুলাল দেবনাথ কচুয়া থানায় জীবন দেবনাথ, হারাধন দেবনাথ, শীতল দেবনাথ, জগদিশ দেবনাথ, পুতুল, শিখা রানী দেবনাথকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার এসআই মো. ছাদেকুর রহমান মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রনজিৎ রায় চৌধুরী জানান, মামলাটি প্রায় ৮ বছর চলাকালীন সময়ে আদালত ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করেন। সাক্ষ্য গ্রহন ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামী জীবন ও হারাধনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড।
বাকী ৪ আসামী শীতল দেবনাথ, জগদিশ দেবনাথ, পুতুল, শিখা রানী দেবনাথ এর অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। রায়ের সময় আসামী জীবন দেবনাথ পলাতক ও হারাধন উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. শফিকুর রহমান শফিক।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন