শরীয়তপুর পৌরসভার পালং এলাকায় এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে সাংবাদিকের ওপর হামলা ঘটনার মামলায় হৃদয় (২৫) নামে এজারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত হৃদয় শরীয়তপুর পৌরসভার উত্তর পালং গ্রামের আজাহার হোসেনের ছেলে। এছাড়াও সে পালং থানার একাধিক মাদক মামলার আসামী। মামলার তদন্তকারী অফিসার পালং মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়ালিয়ুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান (নড়িয়া সার্কেল) তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নড়িয়া উপজেলার রাজনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে হৃদয়কে। শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামানের নির্দেশে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করেন।পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নড়িয়া সার্কেলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি অভিযানিক দল গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাগনগর এলাকা থেকে আসামি হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, জমি সংক্রন্ত বিরোধের জেরে গত ২০ সেপ্টেম্বর পৌরসভার পালং স্কুল এলাকায় এক নারীকে রড দিয়ে পিটিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করে ওই এলাকার কাশের মাদবরের ছেলে নাজমুল মাদবর (২৩), হৃদয় (২৫) ও নাঈম মাদবর (২০)-সহ কয়েকজন যুবক। মারধরের শিকার ওই নারী প্রাণে বাঁচতে আশ্রয় নেন পাশে থাকা এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের শরীয়তপুর প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান পারভেজের দোকানে। এসময় ওই নারীকে বাঁচাতে ওই সাংবাদিক এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে তকেও রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ও দোকান ভাংচুর চালিয়ে নগদ টাকা নিয়ে পালায়।
পরে খবর পেয়ে পালং মডেল থানা পুলিশ আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই সময় তাদের হামলায় সাংবাদিকসহ পাঁচজন আহত হয়। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় গত ২১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী সাংবাদিক রোকনুজ্জামান পারভেজ ও স্থানীয় আজিজুল চৌকিদার বাদী হয়ে দুইটি মামলা দয়ের করেন। যদিও রহস্যজনক কারণে প্রথমে ওই নির্যাতনের শিকার নারীর মামলা নেয়নি পুলিশ।
পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই নারীর মামলা নেয় পালং মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে জেলার শতাধিক সংবাদকর্মী। এরপর উক্ত মামলা প্রায় একমাস পরে এজারভুক্ত আসামিদের মধ্যে তিন নম্বর আসামি হৃদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত